.
অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে দাউদকান্দির রায়পুর বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ। স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে দুই শতক জায়গা ক্রয় করে বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ শেষে ২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর এই স্মৃতিস্তম্ভ উদ্বোধন করা হয়েছিল। এর আগে ২০১৮ সালের ৭ জুলাই একটি পিলার বসানোর মাধ্যমে বধ্যভূমিটি সংরক্ষিত করে সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
২০২১ সালে উদ্বোধনের কয়েক মাস পরই স্মৃতিস্তম্ভের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা যায়। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে বার বার অবহিত করা হলেও দীর্ঘ তিন বছরে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।
সরেজমিন দেখা যায়, বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ইট ও গেট খুলে নেওয়া হয়েছে। সামনের রাস্তারও বেহাল দশা। লেখা হয়নি ৯ শহীদের নাম। এমনকি নামফলকও নেই। দাউদকান্দির মুক্তিযোদ্ধারা জানান, মুক্তিযুদ্ধকালীন উপজেলার রায়পুর কাঠের পুল ছিল এখানে। ১৯৭১ সালের ২৩ মে এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ৯ জন নারী-পুরুষকে রায়পুর খালপাড়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। রায়পুর গণহত্যায় শহীদরা হলেন- ডা. পা-ব দেবনাথ, শীতল চন্দ্র সরকার, পা-ব সাহা, বিদিশীনী সাহা, ফেলান সরকার, শরৎ চন্দ্র সরকার, সুধির বণিক, কামিনী সুন্দরী দেবনাথ এবং উমেশ সরকার (হারাই মিস্ত্রি)।
এই বধ্যভূমিতে ৯ শহীদের স্বজন, স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রায়পুর গণহত্যার গবেষক বাশার খান এবং মুক্তিযুদ্ধপ্রেমীরা দীর্ঘদিন ধরে বধ্যভূমিতে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের সহযোগিতায় এবং উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মিত হয়। অযত্ন-অবহেলায় রায়পুর বধ্যভূমির স্মৃতিস্তম্ভ নষ্ট হয়ে যাওয়া বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাঈমা ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে আমি বধ্যভূমি স্মৃতিস্তম্ভ পরিদর্শন করেছি। শীঘ্রই সমস্যা সমাধান করা হবে।