আজ ১৪ ডিসেম্বর শনিবার মোরেলগঞ্জ মুক্ত বিদস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার মুক্ত হয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা।
শুক্রবার দুপুরে হানাদার মুক্ত দিবসের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তৎকালীন এ অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোসলেম উদ্দিন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে ১৯৭১ সালে দেবহাটা, আশাশনি, পাইকগাছা ও বটিয়াঘাটার একাধীক স্থানে রাজাকার ও পাক সেনাদের সাথে সম্মূখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম।
সেদিনের সেই স্মৃতি আজও কাদিয়ে বেড়ায় পাইকগাছা হাইস্কুল মাঠে সকাল ৯টার দিকে পাক সেনাদের ঘাটিকে আক্রমনের সময় আমার পাশেই ছিল সহযোদ্ধা রিকয়ারলেন্স গানম্যান আসাদের বুকে গুলি লেগে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে শহীদ হন। সে মৃত্যুর পূর্বে বলেছিলেন মোসলেম ভাই দেশ যদি স্বাধীন হয়, আমার রক্তমাখা শার্টটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পৌছে দিবেন।
আমি আসাদের কথা রাখতে পেরেছি, তার রক্তমাখা জামাটি বঙ্গবন্ধুর হাতে পৌছে দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জামাটি হাতে নিয়ে শহীদ আসাদের রুহের মাগফিরত কামনা করেন।
মুজিব বাহিনীর প্রধান, মোরেলগঞ্জ ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি ডা. মোসলেম উদ্দিনের নেতৃত্বে ১৪ জনের একটি দল মোড়েলগঞ্জকে হানাদার মুক্ত করেন এ দিনে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মোসলেম উদ্দিন আরও জানান, ১৩ডিসেম্বর মধ্যরাতে তার সাথে ১৪ জন মুজিব বাহিনীর একটি দল নিয়ে মোংলা থেকে মোরেলগঞ্জে আসেন। প্রথমে তারা টাউন স্কুল মাঠে অবস্থান নিয়ে ভোর রাত ৪টার দিকে ট্রেসার ফায়ার করেন, কোন জবাব না পেয়ে বাজারেরদিকে অগ্রসর হই এবং একে একে কয়েকটি রাজাকার ক্যাম্পে আক্রমন করি।
মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মুক্তিকামী জনতা ফুঁসে উঠলে রাজাকার ও পাক বাহিনীর সদস্যরা জীবন বাঁচাতে নৌকায় করে পানগুছি নদী পাড়ি দিয়ে পালিয়ে যায়। হানাদার মুক্ত হয় মোরেলগঞ্জ। সকাল ৭টার দিকে প্রথাম স্বাধীনতার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি রায়দের বিল্ডিংএ। পরে গোডাউন মাঠে জনসভায় জনাতার উদ্দেশ্যে তিনি বক্তৃতা করেন এবং সকলকে আশ্বস্থ করে বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে আপনারা দোকান পাট খুলে দিন।
হানাদার মুক্ত’র সময় তার সাথে ছিলেন নীল বীর মুক্তিযোদ্ধা রতন মিস্ত্রী, এমকে আজিজ, কচুবুনিয়ার সুলতান আহমেদ, চিংড়াখালীর আ. রশিদ বক্স, শরণখোলার খায়রুল আলম, অমূল্য কুমার রায়, ভাটখালীর আব্দুল খালেক, কাকড়াতলীর চিরানন্দ মন্ডল, জিউধরার আব্দুর রাজ্জাক ও রাজেন মন্ডলসহ আরো অনেকেই।
কুতুবে রব্বানী