৩৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নারায়ণগঞ্জে চার লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীত করে আধুনিকায়ন করা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্করোডের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকার সড়কদ্বীপ, ফুটপাত ও পুরো বাসস্ট্যান্ড জুড়ে বসেছে অবৈধ দোকানপাট। ফলে নষ্ট হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন এ সড়কের সৌন্দর্য। সড়কদ্বীপ ও ফুটপাতে বসা অবৈধ দোকানপাট কিছুতেই সরাতে পারছে না সওজ কর্তৃপক্ষ।
তারা রীতিমত এ সকল অবৈধ দোকানপাটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জরুরী ভিত্তিতে এ সড়কের সাইনবোর্ড এলাকার সড়কদ্বীপ, ফুটপাত ও বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন স্থানে বসা অবৈধ দোকানপাটগুলো উচ্ছেদের দাবি জানান।
জানা যায়, ৩৬৪ কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডটি (চাষাঢ়া থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত) চার লেন থেকে ছয় লেনে ৬ লেনে উন্নীত করে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পটি ইতোমধ্যে ৮ কিলোমিটারের মধ্যে ৭ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এ সড়কের তিনটি স্থানে রয়েছে আন্ডারপাস, দুটি স্থানে দুটি ফুটওভারব্রিজ ও সড়কের দুপাশে রয়েছে ড্রেনসহ ফুটপাত ও লাইটিংসহ বিভিন্ন ধরণের সৌন্দর্য বর্ধন কাজ।
বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সড়কদ্বীপ ও রোড ডিভাইডার। সবমিলিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোডটি দৃষ্টিনন্দন সড়কে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এরমধ্যে সাইনবোর্ড এলাকায় সড়কদ্বীপ ও ফুটপাতসহ বাসস্ট্যান্ডে বসেছে অবৈধ দোকানপাট। কিছুতেই এ অবৈধ দোকানপাট সরাতে পারছে না সওজ কর্তৃপক্ষ। তারা রীতিমত এ সকল অবৈধ দোকানপাটের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছেন। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সাইনবোর্ড এলাকায় সড়কদ্বীপে ও ফুটপাত এমনকি পুরো বাসস্ট্যান্ড জুড়েই বসেছে অসংখ্য অবৈধ দোকানপাট।
ফলে অবৈধ দোকানপাট এখন হাট-বাজারে পরিণত হয়েছে। এ অবৈধ দোকানপাটের কারণে ছয় লেনে উন্নীত করা আধুনিক সড়কের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার তমাল হোসেন বলেন, শিল্পাঞ্চল নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াতের অন্যতম সড়ক ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিঙ্ক রোড। এ সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড স্থানে মিলিত হয়েছে। এ সড়ক দিয়ে নারায়ণগঞ্জ নগরবাসীসহ অন্যান্য আশপাশের লোকজন ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করছেন।
এ সড়ক নারায়ণগঞ্জ শহর থেকে রাজধানী ঢাকায় চলাচলের অন্যতম ও প্রধান একটি সড়ক। তিনি আরো বলেন, এ সড়কের আশপাশে রয়েছে নারায়ণগঞ্জের সরকারি প্রায় সকল অফিস-আদালত। এ সড়কের পাশে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা পরিষদ, এলজিইডি কার্যালয়, পাসপোর্ট অফিস, জেলা কারাগার, জেলা নির্বাচন অফিস ও শিল্প পুলিশ-৪’র পুলিশ লাইন্সসহ নানা ধরনের স্থাপনা রয়েছে।
ইদানিং এ সড়কটি আধুনিক সড়কে পরিণত করা হয়েছে। কিন্তু সড়কের বিভিন্ন স্থানে বসা অবৈধ দোকানপাট এ সড়কের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। ভূইঘর এলাকার বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন বলেন, সাইনবোর্ড এলাকার সড়কদ্বীপে ও ফুটপাত এবং পুরো বাসস্ট্যান্ড জুড়ে বসেছে কয়েকশ অবৈধ দোকনপাট। এখানে রয়েছে হোটেল, বিভিন্ন খাবারের দোকান, চায়ের দোকান, ফুটপাতে জামাকাপড় বিক্রি ও ফুসকার দোকানসহ নানা ধরণের অবৈধ দোকানপাট।
এ অবৈধ দোকানপাটের ময়লা-আবর্জনা সড়কে ফেলে এর সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এ সকল দোকানপাটগুলো জরুরী ভিত্তিতে স্থানীয়ভাবে উচ্ছেদ করার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সাইনবোর্ডের সাহেবপাড়ার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, যতই দিন যাচ্ছে ততই অবৈধ দোকানপাটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অবৈধ দোকানপাট থেকে এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী লোকজন অর্থ আদায় করছে।
তারাই প্রভাব খাটিয়ে এ সকল দোকানপাট টিকিয়ে রেখেছে। এ বিষয়েসড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরে আলম বলেন, সড়কদ্বীপসহ বিভিন্ন স্থানে বসা অবৈধ দোকানপাট কিছুতেই সরানো যাচ্ছে না। এমনকি থানায় জিডি করেও এগুলো রোধ করা যাচ্ছে না।
কুতুবে রব্বানী