ঝিনাইদহে শীতে খেজুরের রস সংহ্রহ ও গুড় তৈরির ধুম পড়ে গেছে। প্রতিদিন গাছিরা খেজুরগাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে সুস্বাদু গুড় তৈরি করছেন। গুড়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে দামও বেড়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারে খেজুর গুড় প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে গাছ ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে গাছিদের গুড় উৎপাদন খরচও বেড়েছে। ঝিনাইদহে খেজুর গুড় শুধু একটি খাদ্য উপকরণ নয়, এটি এ অঞ্চলের অর্থনীতি ও সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদিকে খেজুর গুড়ের দাম ও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী চিনি, আখের গুড়, আটা ও ফ্লেবার দিয়ে ভেজাল গুড় তৈরির অভিযোগ উঠেছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা মামুনশিয়া গ্রামের বাসিন্দা বাদশা মিয়া বলেন, প্রতি বছরের মত এবছর গুড় তৈরি শুরু করেছেন। এখানকার গুড়ের স্বাদ অসাধারণ। এবছর যশোর থেকে কিছু গাছি এসে মামুনশিয়া বকুলতলা মাঠে খেজুরগাছ ভাড়া নিয়ে গুড় উৎপাদন করছেন। গাছি আব্দুল কাদের বলেন, আমরা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে প্রতিদিন গুড় উৎপাদন করছি। তবে গাছ ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা দাম বেড়েছে। পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা দরে।
১০কেজি রস জ্বালিয়ে এক কেজি খাঁটি খেজুরের গুড় তৈরি হয়। ডাকবাংলার ব্যবসায়ী কামাল উদ্দিন বলেন, শীত মৌসুমে খেজুরের গুড় আমাদের অঞ্চলের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখে। তবে আধুনিক পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণের সুযোগ পেলে গাছিরা আরো বেশি লাভবান হতে পারবেন। গাছিরা মনে করেন, সরকারি প্রষ্ঠপোষকতা পেলে ঝিনাইদহের গুড় উৎপাদন আরো বাড়বে।
অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা গুড় তৈরির কাজে খুব একটা আগ্রহী নয়। বিভিন্ন লাভজনক ব্যবসা ও আধুনিক চাষাবাদ করে বেশি পরিমাণ লাভের কারণে গুড় তৈরির কাজ দিন দিন কমে যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ নূর-এ-নবী বলেন, এরারের শীতে আগের মতো খেজুর গাছ কাটতে দেখা যায় না। গাছ কমে গেছে।
প্রতি বছরই কৃষকদের সাথে নিয়ে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় গাছের চারা রোপণ করা হয়। খেজুর গাছ, রস গুড় তৈরি এখন ইতিহাস ঐতিহ্য হয়ে পড়েছে।
কুতুবে রব্বানী