ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নালিতাবাড়ীতে জেঁকে বসেছে শীত, গারো পাহাড়ে চলছে শীতের মহড়া

সংবাদদাতা, নালিতাবাড়ী, শেরপুর

প্রকাশিত: ১৮:১৪, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

নালিতাবাড়ীতে জেঁকে বসেছে শীত, গারো পাহাড়ে চলছে শীতের মহড়া

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বেড়ে চলেছে শীতের তীব্রতা। শীতে কাঁপছে ভারত সীমান্তঘেঁষা জেলার গারো পাহাড়ি জনপদ নালিতাবাড়ী উপজেলার মানুষ। জেঁকে বসা শীতের সাথে প্রবাহিত হচ্ছে শৈত্য প্রবাহ। এতে কষ্ট বেড়েছে দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের। বিশেষ করে করে গারো পাহাড়ের ঢালে, অভ্যন্তরে ও পাদদেশে বসবাসকারী মুসলিম সম্প্রদায়হ উপজাতি গরো ও কোচ সম্প্রদায়ের মানুষের কষ্ট বেড়েছে দ্বিগুণ। হীমেল ঠান্ডা শীতের মাঝে কাজে যোগ দিতে পারছে না অনেক শ্রমিক। হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়া শীতার্তরা ভীড় করছেন পুরাতন শীত নিবারনের কাপড়ের দোকানে। এদিকে, শীতের পাশাপাশি চলছে বোরো আবাদের বীজতলা তৈরির কাজ। টানা শীত আর মৃদু শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকলে আসন্ন বোরো আবাদের বীজতলার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষকরা জানান। গত কয়েক দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকা সমশ্চুড়া, মধুটিলা, বুরুঙ্গা, কালাপানি, আন্ধারুপাড়া, খলচান্দা, বারোমারী, দাওধারা, কাটাবাড়ী, হাতিপাগার, নাকুগাঁও, কালাকুমা, তারানী, পানিহাটা ও মায়াঘাসী এলাকার পাহাড়ি পল্লীতে চলছে তীব্র শীতের মহড়া। উত্তরে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের হিমালয় পর্বতের হিমবায়ু আর ঘন কুয়াশায় এখন এলাকায় জেঁকে বসেছে প্রচন্ড শীত। এতে খেটে খাওয়া ছিন্নমুল মানুষগুলো প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে পড়েছেন।গারো আদিবাসী নেতা ও সাবেক ট্রাইবাল চেয়ারম্যান মি. লুইস নেংমিনজা জানান, পাহাড়ি এলাকায় দিন দিন শীত বাড়ছে। প্রচন্ড শীতের কারনে সীমান্ত এলাকার গারো আদিবাসীরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। প্রতিবছর এভাবেই শীতের সঙ্গে লড়াই করে তাদেরকে বেঁচে থাকতে হয়। এসব অঞ্চলের শীতার্ত মানুষ পাহাড় থেকে লাকড়ি ও খরকুটা সংগ্রহ করে আগুন দিয়ে তা জ্বালিয়ে শরীর ছেঁকে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
উপজেলার আন্ধারুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শাহজামাল বলেন, ভিতর এলাকার চেয়ে সীমান্তবর্তী পাহাড়ি এলাকায় শীত পড়েছে বেশি। সেই হিসেবে এই এলাকার গরীব দরিদ্র অসহায় মানুষ তেমন শীতবস্ত্র পায় না। তাই পাহাড়ি এলাকায় বেশি পরিমান শীতবস্ত্র বিতরণ করা প্রয়োজন। সীমান্তবর্তী পোড়াগাঁও ইউনিয়নের পাহাড়ি খলচান্দা গ্রামের বাসিন্দা কোচ আদিবাসী পরিমল কোচ বলেন, সমতলের চেয়ে গারো পাহাড়ে শীত পড়েছে বেশি। বেলা ৯/১০ টার আগে সুর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে রাত জেগে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে মানুষ। তাছাড়া কোচরা সব সময়ই সরকারি বরাদ্ধের চেয়ে শীতবস্ত্র কম পায়।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুদ রানা জানান, সরকারীভাবে এ উপজেলায় শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। খুব শীঘ্রই শীতার্থ মানুষের মাঝে এই কম্বল বিতরন করা হবে।

মোহাম্মদ আলী

×