ছবি: প্রতিনিধি
পদ্মা-যমুনায় নাব্যতা-সঙ্কট ও ঘন কুয়াশায় প্রায়শই বন্ধ হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরি সার্ভিস। এর মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে যাত্রীরা পাড়ি দিচ্ছে দীর্ঘ নৌপথ। লঞ্চ ও ফেরির চাইতে এ বাহনে যাত্রীদের ভাড়াও গুণতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি। রয়েছে নানা ঝুঁকি। উভয় রুটে এভাবে অবৈধ নৌযান চলাচল করলেও প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি, এমনটাই জানিয়েছেন আরিচা জোনের লঞ্চ মালিক-শ্রমিকরা।
জানা যায়, প্রত্যহ আরিচা ঘাট থেকে যাত্রী বোঝাই ট্রলার যাচ্ছে কাজিরহাটের উদ্দেশ্যে। অনুরুপ কাজিরহাট থেকে আসছে আরিচা ঘাটে। যাত্রী প্রতি ভাড়া আদায় হচ্ছে নৌকা মালিকদের ইচ্ছে মতো। আরিচা ও পাটুরিয়া রুটে ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচলের কোন অনুমতি না থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে নিশ্চুপ। তবে, আরিচা ঘাটের নৌকা মালিক ও চালকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি ফেরির লুজ যাত্রী ইজারাদারদের টাকা দিয়ে এরুটে যাত্রী পারাপার করছেন তারা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন নৌকা মালিক জানান, আমরা গরিব মানুষ। ট্রলার যোগে যাত্রী পারাপার করে সামান্ন্য অর্থে আমাদের সংসার চললেও এর মধ্যে ভাগ বসিয়েছে ফেরির লুজ যাত্রী ইজারাদারের লোকজন। এরুটে যাত্রী প্রতি ১০০ টাকা হারে ভাড়া আদায় করলেও ঘাট থেকে নৌকায় যাত্রী তুললে এদের দিতে হয় যাত্রী প্রতি ৪০ টাকা। অথচ ফেরিতে লুজ যাত্রী ভাড়া জন প্রতি মাত্র ৩৬ টাকা। এরা ইজারার অযুহাতে আমাদের কাছ থেকে এ ভাবে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যা দেখার বা আমাদের পক্ষে বলার কেই নাই।
তারা আরও জানান, অতীতেও এরুটের ফেরির লুজ যাত্রী ইজারা ছিল। সে সময়ে ও আমারা চলছি আমাদের মতো। কেউ আমাদের তেমন বাঁধা তৈরী করেনি। কিন্তু বর্তমান সময়ে টাকা না দিলে নৌকা চালানোর কোন উপায় নাই।
আরিচা-কাজিরহাট রুটে ফেরির লুজ যাত্রী ইজারাদারদের পক্ষে স্থানীয় এক বিএনপি নেতা বলেন, স্পর্শকাতর এরুটে ইঞ্জিন চালিত নৌকা চলাচলের কোন বৈধতা না থাকলেও নৌকা মালিক-চালকরা চলাচল করছে তাদের ইচ্ছে মাফিক। ঘাটের যাত্রীরাও সুযোগ বুঝে এসকল নৌকাযোগে পারাপার হচ্ছে। এতে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে ফেরির লুজ যাত্রী ইজারা কর্তৃপক্ষ। মুলত ক্ষতি পোষাতেই নৌকা থেকে যাত্রী ভাড়া টাকাটা আদায় করা হচ্ছে।
আরিচা-কাজিরহাট রুটের কয়েকজন লঞ্চ মালিক জানান, ঘাট থেকে য়ে সকল যাত্রী নৌকায় পারাপার হয় তা যে সব ফেরির যাত্রী তা নয়। এরা তো লঞ্চেও পারাপার হয়। তবে কেন ফেরির লুজ যাত্রী ইজারাদাররা এ টাকায় একাই ভাগ বসাচ্ছেন ! এমন প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
ঘাট কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিওটিএ সূত্র জানিয়েছেন, আরিচা-কাজিরহাট ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ পথে ফেরি-লঞ্চ-কার্গো চলাচল নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন রাখতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচলে বিধি নিষেধ রয়েছে। নৌকাসহ অবৈধ নৌযান চলাচল বন্ধে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহীনিকে পত্র মারফত জানানো হয়েছে।
এম.কে.