ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ ২০২৫, ২৯ ফাল্গুন ১৪৩১

হয়রানিমূলক মামলা দিলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা

প্রকাশিত: ১৭:২২, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৭:২৪, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

হয়রানিমূলক মামলা দিলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, কাউকে গ্রেফতার করতে হলে অবশ্যই বাহিনীর সদস্যদের নির্ধারিত পোশাক পরিহিত থাকতে হবে, প্রয়োজনে পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে।

এছাড়া কেউ হয়রানিমূলক মামলার শিকার হচ্ছে কিনা সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। কেউ যদি মিথ্যা মামলা করে থাকে তার বিরুদ্ধে নিতে হবে আইনি ব্যবস্থা। তবে অপরাধীরা যেন কোনভাবেই ছাড় না পায়।


তিনি আরো বলেছেন, বিগত ১৫ বছরে প্রতিবেশী দেশ এদেশ থেকে অনেক সুবিধা নিয়েছে। এখন সুবিধা না পেয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। আর সুবিধা দেওয়া হবে না।


উপদেষ্টা সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনার শিল্পকলা একাডেমি মিলন আয়তনে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড, আনসার ও ভিডিপি, কারা অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।


সভায় কোনো রাজনৈতিক দলকে বাড়তি সুবিধা না দেওয়ার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তেলবাজি বন্ধ করতে হবে। সিভিল ড্রেসে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। 
উপদেষ্টা বলেন, দেশের বিভিন্ন থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। কিন্তু অভিযানে এখনও আশানুরূপ অস্ত্র উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের মধ্য দিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে।

তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় মব জাস্টিস হচ্ছে। অনেকে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। যে কারণে হত্যাকাণ্ডও হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এটা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে।


জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের পর অনেক থানা থেকে অস্ত্র লুট হয়েছে। এগুলো উদ্ধার না হওয়ায় আইন-শৃংখলা রক্ষায় কিছুটা বিঘ্ন ঘটছে। যেসব শীর্ষ সন্ত্রাসী ২০-২৫ বছর ধরে কারাভোগ করে এখন মুক্ত হয়েছে তাদের ব্যাপারেও আইন-শৃংখলা বাহিনীকে সজাগ থাকার আহবান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।


তিনি বলেন, সকল প্রকার সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে হবে। কোন রাজনৈতিক দলকে বাড়তি সুযোগ দেওয়া হবেনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সকল প্রকার চাঁদাবাজি বন্ধে আরও কঠোর হতে হবে।


মাদকের ব্যাপারে সরকার জিরো টলারেন্স উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে অন্যান্য সংস্থা সহযোগিতা করবে। যতদিন পর্যন্ত তাদেরকে হাতিয়ার না দেওয়া হয় ততদিন তারা পুলিশ বা অন্য কোন বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ করবে।


খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হকের সভাপতিত্বে এসময় স্বাগত বক্তৃতা করেন, বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। মতবিনিময় সভায় পুলিশের আইজি মো. বাহারুল আলম, খুলনা নেভাল এরিয়া কামান্ডার রিয়ার এডমিরাল গোলাম সাদেক, বিজিবি মহাপরিচালক জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, র‍্যাবের মহাপরিচালক একেএম শহিদুর রহমান, ১০৫ ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজহার সিদ্দিকী, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার, ডিজিএফআই খুলনার কর্ণেল জিএস সৈয়দ আসাদুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন প্রমুখসহ খুলনা বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সিভির ও পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


উপদেষ্টা বিকেলে খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থার খুলনা অঞ্চলে কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।

রিয়াদ

×