কুয়াশা
হেমন্তের বিদায় লগ্নে সকাল ও সন্ধ্যা সৈয়দপুরের প্রকৃতিকে কুয়াশার চাদর আবৃত করছে। ভোরের সূর্যোদয়ের তাপ সামান্য ছড়াতেই দিন ফুরিয়ে ঘন কুয়াশায় দীর্ঘকায় রাতের আধারে শীত জেঁকে বসেছে। এতে নিম্ন আয়ের মানুষজন পড়েছে বিপাকে।
সোমবার রাতে সৈয়দপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন ছিল ১৪ ডিগ্রি। সেলসিয়াস ফারেনহাইট। আগামী কয়েকদিনের মধ্য এই তাপমাত্রা আরও কমতে বলে জানান সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হাকিম।
উপজেলার কামারপুকুর, বোতলাগাড়ি, খাতামধুপুর, বাঙ্গালীপুর, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন ও সৈয়দপুর পৌর এলাকার শীতের তীব্রতা বাড়ায় গরিব, অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষরা কষ্ট পাচ্ছেন। অনেকে পুরোনো কাঁথা কিংবা চট গায়ে দিয়ে স্টেশন, বাসস্ট্যান্ডসহ ফুটপাতে ঘুমাচ্ছেন।
রাতে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, ছিন্নমূল নারী-পুরুষ শীতের রাতে সামান্য একটু কাপড় গায়ে মুড়িয়ে শুয়ে আছেন। সেখানে কথা হয় বিধবা তছলিমা বেগমের (৬৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, স্বামী নেই, অভাবের সংসার। সারাদিন ভিক্ষা করে রাতে স্টেশনে থাকছি। এবার একটু বেশি ঠান্ডা পড়বে মনে হয়েছে। এখনও কেউ গরম কাপড় দেয় নাই।
সকালের ঠান্ডায় জবুথবু ভ্যানচালক আজগার আলী (৫৭)। তিনি জানান, পাঁচজনের সংসার তার। ঠান্ডা উপেক্ষা করে পাইকারি সবজি বাজার বাইপাস সড়কে এসেছি। এখান থেকে শাকসবজি নিয়ে বাজারে যাবো। সকাল সকাল বের হওয়ায় কুয়াশার কারণে ১০ ফুটও দেখা যাচ্ছে না। যে ঠান্ডা পড়েছে আমাদের মতো গরিব মানুষদের কষ্ট।
সেই সাথে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামায়। গত কয়েকদিন যাবত ঘন কুয়াশার কারণে সিডিউলে বিঘ্ন ঘটে চলেছে। একইভাবে সড়কে ও রেলপথে দিনের বেলায়ও হেড লাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে।
এদিকে সৈয়দপুরে পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে জমে উঠেছে বেচাকেনা। তবে এবছর দাম একটু বেশি বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা। গরিব ও অসহায় মানুষের শীতের ভরসার স্থল ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকান।
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও পৌরসভার প্রশাসক নূর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, কয়েকদিন থেকে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। তাই শীতবস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে। এর জন্য জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তবে সরকারের পাশাপাশি বিত্তবান ও এনজিওদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
শহীদ