ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের নতুন আশা

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:৫৩, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের নতুন আশা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আগাম জাতের শীতকালীন পেঁয়াজ চাষ করে সফল হচ্ছেন কৃষকরা। এ বছর জেলায় ১ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন জাতের পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসলে এবং ন্যায্য দাম পেলে তারা ভালো লাভবান হবেন। কৃষি বিভাগও বলছে, আগাম জাতের পেঁয়াজ বাজারে আসলে পেঁয়াজের দাম সাশ্রয় হবে।
সীমান্তবর্তী এ জেলায় গত বছর ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর কৃষকরা মাঠে মাঠে শীতকালীন (কোন্দ) আগাম জাতের পেঁয়াজ লাগিয়েছেন। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে এ জাতের পেঁয়াজ রোপণ করা হয় এবং ডিসেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পেঁয়াজ বাজারে উঠতে শুরু করে।
সদর উপজেলার কৃষক জহুরুল ইসলাম জানান, ৬ বিঘা আগাম জাতের পেঁয়াজ লাগিয়েছি। প্রতি বিঘায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘায় ৯০ থেকে ১০০ মণ পেঁয়াজ পাওয়া যায়। খরচ বাদ দিয়ে প্রতি বিঘায় ৮০-৯০ হাজার টাকা লাভ হবে। এ বছর আমার সব জমিতেই আগাম জাতের পেঁয়াজ খুব ভালো হয়েছে। কোন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্ঘটনা না হলে বেশ ভালো লাভ হবে।
কৃষক মজিবুর রহমান জানান, জমিতে আগাম জাতের পেঁয়াজের বীজ লাগানো আছে। ডিসেম্বরে জমি থেকে পেঁয়াজ উঠানো হবে। আমরা অনেক কৃষকই প্রতি মণ পেঁয়াজের দাম ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা পেতে পারি। তবে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা পেলে আমরা লাভবান থাকব। আমাদের মাঠে শুধুই পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে।
কৃষক মতিউর রহমান বলেন, লাভের আশায় পেঁয়াজ লাগালেও মাঝে মাঝে লাভ করতে পারি না। কারণ, যখন পেঁয়াজ উঠানোর সময় আসে তখন হঠাৎ করেই ভারত থেকে পেঁয়াজ আসতে শুরু করে এবং সিন্ডিকেট করে পেঁয়াজের দাম কমে যায়। তাই আমরা চাই যে, আগাম জাতের পেঁয়াজ উঠানোর সময় যেন ভারতীয় পেঁয়াজ না আসে।
কৃষক হাসিব হোসেন জানান, শীতকালীন কোন্দ জাতের পেঁয়াজে বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে ও নিড়ানির কাজ করা হচ্ছে, যাতে কোন ধরনের পোকামাকড় না লাগতে পারে। স্প্রে ও কীটনাশকের দাম এ বছর একটু বেশি। তাছাড়া গত বছরের তুলনায় এবছর দ্বিগুণ দামে পেঁয়াজের বীজ ক্রয় করা হয়েছে। আমরা কৃষি বিভাগের কাছে আগাম জাতের পেঁয়াজের বীজ চাই।
কৃষক বাবুল আক্তার বলেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কোন ধরনের সহযোগিতা পাচ্ছি না। এখন পর্যন্ত কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ের কোন কর্মকর্তা আমাদের দেখতে আসেননি, কোন পরামর্শও পাওয়া যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, আগাম জাতের শীতকালীন কোন্দ জাতের পেঁয়াজ বাজারে আসলে পেঁয়াজের দাম সাশ্রয় হবে। কৃষকদের বিভিন্নভাবে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় চলতি বছরে শীতকালীন আগাম জাতের কোন্দ পেঁয়াজ ও ছাচি পেঁয়াজ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে।

 

×