সরকারি ও বেসরকারি ভাবে সারা দেশে যে সময় তাল গাছ রোপন ও লালন-পালন করা হচ্ছে ঠিক সেই সময় উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্তারা তাদের সরবরাহ এলাকায় উপড়িভাগের ডালপাতা কেটে একের পর এক মেরে ফেলছেন পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারি, বজ্রপাত নিরোধক এবং বহুগুনে ভরা তাল গাছ। জানা গেছে, পিডিবি নেসকো) আরইবি’র কর্মকর্তারা ভবিষৎ পরিকল্পনা ছাড়াই তাদের ইচ্ছামত সরকারি ও বেসরকারি জমিতে খুঁটি বসিয়ে উচ্চ ভোল্টের সরবরাহ লাইন স্থাপন করে থাকেন জোড়পুর্বক। এরপর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডালপাতা কেটে মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার মাধ্যমে একের পর এক মেরে ফেলা হয়েছে এবং হচ্ছে অনেক তালগাছ। এই ভাবে বেশি পরিমানে তালগাছ মেরে ফেলার ঘটনা ঘটেছে উপজেলার নসরতপুর এলাকায়। এঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা এবং মুক্তিযোদ্ধারা বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজনকে বাধা দিতে গেলে মামলার ভয় দেখিয়ে স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে আসছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা লাভের পরের বছর নসরতপুরের স্থানীয় বীর মুক্তিযেদ্ধারা বিজয়ের ‘জীবন্ত স্মারক’ হিসাবে নসরতপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় ১৭১টি তালের বীজ রোপন করে। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে বেড়ে উঠে শতাধিক গাছ। এসব তালগাছের সারির মাঝে ও গাছ ঘেঁষে স্থাপন করা হয় বিদ্যুতের সরবরাহ লাইন। পরে রক্ষনাবেক্ষনের অজুহাতে ডালপাতা কেটে গাছের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়ার ধারাবাহিকতায় রবিবার ফের নসরতপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দুপচাঁচিয়ার চৌমহনি কার্যালয়ের কর্মীরা। তারা তালগাছ গুলোর ডালপাতা কাটতে শুরু করে। খবর পেয়ে স্থানীয় বিক্ষব্ধ জনতা এবং গাছ রোপনকারি কয়েক জীবিত বীর মুক্তিযোদ্ধা বাধা দিলে পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা পিছু হটে। কিন্তু যাওয়ার সময় তারা মামলাসহ নানা হুমকি ধামকি দিয়ে যায় বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধকালিন ইউনিট কমান্ডার সুনিল কুমার সরকার, মোজাম্মেল হোসেন আব্দুল হামিদ ও সম্মুখ যোদ্দা আবু তাহের। ওই চারজনসহ নসরতপুর ইউনিয়নের দেড় শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার পরিজন এবং সচেতন জনতা স্বাধীনতা ও বিজয়ের জীবন্ত স্মারক তালগাছ মেরে ফেলার জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন। এব্যাপারে বগুড়া পল্লি বিদ্যুৎ সমিতি বগুড়ার জিএম মনোয়ারুল ইসলাম ফিরোজীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের নিকট দাবী করেন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে বিদ্যুৎ লাইনের আওতাধীন যে গাছ-ই থাকুক না কেন সেগুলোা প্রতি বছর কেটে ছেঁটে দেয়া হয়, এছাড়া কোন বিকল্প নাই। অথচ সড়কের জায়গায় ইচ্ছামত বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করার পর সড়ক সম্প্রসারণ কাজের সময় সরকারের লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে ফের লাইন স্থাপন করতে দেখা যাচ্ছে নেসকো ও আরইবিকে।