মারধর
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গণনাকারীর দেওয়া তথ্যকে ভিত্তি করে কলেজ পড়ুয়া মেয়ে, স্বামী-স্ত্রীসহ ৪ জনকে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্তমানে আহতরা কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা হলেন, সেপ্টেম্বরে উপজেলার গামইরতলা গ্রামের এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় চলছে।
ভুক্তভোগী মিজানুর ঘরামী জানান, ২৭ নভেম্বর রাতে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক খাইয়ে দূর্বৃত্তরা তাদের ঘর থেকে স্বর্ণালঙ্কার সহ নগদ অর্থ লুটে নেয়। পরে তিনিসহ তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি, ছেলে এবং স্ত্রীর বোনের কন্যাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা। কিন্তু দুদিন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরলে সালিশ বৈঠকের নামে তাদের গোটা পরিবারের উপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়।
মিজানুর আরো বলেন, স্থানীয় এক গণনাকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে অনৈতিক সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তাদের এমন নির্যাতন করা হয়। মিজানুরের স্ত্রী সাবিনা জানান, হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরলে জানতে পারি অঞ্জনা রানী নামে এক নারী গণনা করে স্থানীয়দের নাকি বলেছেন আমার স্বামীর সঙ্গে বোনের মেয়ের পরকিয়া সম্পর্ক রয়েছে। একারণে চেতনানাশক খাইয়ে এক বিছানায় থাকতে চুরির নাটক সাজানো হয়েছে। যা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ ঘটনার দিন আমার শ্বশুর শ্বাশুড়িসহ ছেলেও বাড়িতে ছিলেন। তারা সবাই মেডিসিনে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমে পর্যন্ত মিথ্যা এবং গণনাকারী ভুল তথ্য দিয়ে নিউজ প্রকাশিত হয়েছে। এখন কলেজ পড়ুয়া আমার বোনের মেয়ে মানসিক এবং শারিরিক নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, রবিবার (১ ডিসেম্বর) বিকালে হাবীব ঘরামী আমাদের বাড়িতে এসে সালিশ বসায় এবং পরকিয়ার বিষয়টি গণনাকারীর উদ্ধৃতি দিয়ে আলোচনা করলে আমি এর প্রতিবাদ করি। এসময় জাকির, মামুনসহ বেশ কয়েকজন হাবীব ঘরামীর উপস্থিতে আমাদের সবাইকে মারধর করে। এখন উল্টো চুরির বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে পরকিয়া বলে লোক সমাজে চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে গণনাকারী অঞ্জনা রানীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কারো পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা গণনা করিনি। শুধু কিভাবে চুরির ঘটনা ঘটেছে তা জানতে এসেছে সেটুকু বলেছি। কিন্তু কোন প্রমাণ ছাড়া পরকিয়া প্রেমের বিষয়টি কিভাবে লোক সমাজে ছড়িয়ে দিলেন, এমন প্রশ্নের কোন সদোত্তর তিনি দিতে পারেন নি।
সালিশদার হাবীব ঘরামী বলেন, বিষয়টি মিজানুরদের পারিবারিক ছিল। আমি কাউকে মারধর করিনি। কলাপাড়া থানার ওসি মোহাম্মদ জুয়েল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এবিষয়ে ভুক্তভোগী এক নারী থানায় এসেছিলেন। তিনি অভিযোগ দায়ের করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শহিদ