আজ ৪ ডিসেম্বর।ফুলছড়ি-সাঘাটা হানাদারমুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালে এইদিনে গাইবান্ধা জেলার মধ্যে প্রথম হানাদারমুক্ত হয় ফুলছড়ি ও সাঘাটা। এই দুই উপজেলাকে মুক্ত করতে পাঁচ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দুইজন সাধারণ মানুষ শাহাদৎ বরণ করেন। এইদিন যুদ্ধে ২২ পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়।
৭১’ এর মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের উষালগ্নে পাকিস্তানী বাহিনী বাংলায় “পোড়ামাটি নীতি” বাস্তবায়নের জন্য জ্বালাও-পোড়াওসহ ধ্বংসযজ্ঞ চরম সীমায় উপনীত হয়েছিল। সাঘাটা ও ফুলছড়ির মাটি ও মানুষকে দখলদারদের অত্যাচার থেকে মুক্ত করতে সম্মূখযুদ্ধ শুরু হয়। সে সময় ১১নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিবাহিনীর একটি দল ফুলছড়ি আসেন। তারা রাতে উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে গলনার চরে অবস্থান নেন। পরিকল্পনা মোতাবেক (৩ ডিসেম্বর) রাতে চারটি দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েন মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা। ৪ ডিসেম্বর খুব ভোরে ফুলছড়ি ও সাঘাটার তিস্তামূখঘাট রেলওয়ে ফেরিঘাটে অবস্থিত। পাকিস্তান সেনাদের শিবিরে আক্রমণে করে মুক্তিবাহিনী। মুক্তিযোদ্ধাদের দিনব্যাপী গেরিলা যুদ্ধের পর সন্ধ্যার দিকে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। এই লোমহর্ষক যুদ্ধে পাকিস্তানের বাহিনী আত্মসমর্পন করে। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা ফুলছড়ি পুলিশ স্টেশনের অস্ত্রাগার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেন। ওই সম্মূখযুদ্ধে আফজাল হোসেন, জাহেদুর রহমান বাদল, কবেদ আলী, ওসমান গণি ও আব্দুল সোবহান শাহাদৎ বরণ করেন।
সাবেক উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আজহার আলী বলেন, ‘যুদ্ধ শেষে জাতির সুর্য্য সন্তানের মৃতদেহ সাঘাটার সেগুনা ইউনিয়নের যথাযথ মর্যাদায় দাফন করা হয়। দেশ স্বাধীন হলে পাঁচ বীর শহীদের সম্মানার্থে ইউনিয়নের নাম পরিবর্তন করে মুক্তিনগর ইউনিয়ন রাখা হয়। মুক্তিনগর ইউনিয়ন বতর্মানে সাঘাটা উপজেলার অর্ন্তভুক্ত।’ এ উপজেলায় শহীদদের সম্মানে তাদের কবরের পাশে স্মৃতিসৌধ ও মুক্তিযোদ্ধা যাদুঘর নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতি বছরই মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়।
আজ ফুলছড়ি-সাঘাটা হানাদারমুক্ত দিবস
শীর্ষ সংবাদ: