লালমনিরহাটে ৬৮ টাকার আলু বীজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকায়
কারসাজির মাধ্যমে কৃষকদের কাছে ৬৮ টাকা কেজির বীজ আলু মৌসুমের শুরুতে ৯০ টাকায় বিক্রি করা হলেও সংকট দেখিয়ে এখন ১২০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কিছু কিছু কৃষক এমন দরে বীজ কিনে রোপণ শুরু করলেও অধিকাংশ কৃষক শঙ্কায় রয়েছেন আদৌ আলু বীজ রোপণ করতে পারবেন কি না, এমন দাম নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
কৃষকের অভিযোগ, বাড়তি দামে বিক্রির জন্য বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তাদের দোকান বা গুদামে বীজ আলু রাখছেন না। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে মণপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় অজ্ঞাত স্থান থেকে কৃষকের কাছে বীজ আলু পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, বীজ আলুর সংকট নেই, সংকট হবেও না। কারণ চাহিদার চেয়েও বেশি মজুত আছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছর কার্ডিনাল, গ্র্যানোলা আলু বীজ ৪৮ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এ বছর ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় সেই বীজ আলু বিক্রি করার কথা থাকলেও সংকট দেখিয়ে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। বিএডিসির অনুমোদিত ডিলার, বিভিন্ন হিমাগারে আলু বীজের জন্য ঘোরাঘুরি করেও বীজ না পেয়ে ঘুরছেন বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানির ডিলারদের কাছে। কোথাও আলু নেই, এমন সংকট দেখিয়ে গোপনে দাম বেশির কথা বলে চাহিদার তুলনায় কম পরিমাণ আলু সরবরাহ করছেন অসাধু ব্যসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে আলু না পেয়ে কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ। অনেকের ধারণা, বীজ সংকটে এ বছর আলু চাষ ব্যাহত হতে পারে।
আদিতমারী উপজেলার আবুল কাশেন হিমাগারে বীজ কিনতে আসা আলু চাষি হেলাল উদ্দিন জানান, ঘরে বীজ নেই, ডিলারের কাছে বীজ নেই, ব্যবসায়ীদের বীজে কোনো ভরসা নেই। মানসম্পন্ন বীজ কোথাও মিলছে না। মৌসুম শুরুর আগেই বীজ আলুর কৃত্রিম সংকট তৈরি করেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। কারসাজির মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। পর্যাপ্ত জোগান থাকলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তাদের দোকান ও গুদামে বীজ আলু রাখছেন না। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে মণপ্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বেশি রেখে অজ্ঞাত স্থান থেকে কৃষকের কাছে বীজ পৌঁছে দিচ্ছেন। এতে বেশিরভাগ চাষি হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সাইখুল আরেফিন বলেন, বিএডিসি চাহিদার চেয়ে অনেক কম বীজ সরবরাহ করে। চাহিদার অবশিষ্ট বীজ কৃষক হিমাগারে সংরক্ষণ করে। এ বছর খাবার আলুর দাম বেশি থাকায় কৃষক আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। এজন্যই বীজ সংকট তৈরি হয়েছে। যে ডিলার বেশি দামে বিক্রি করছে, বিএডিসি, কৃষি বিপণন, জেলা প্রশাসনসহ আমরা নিয়মিত তাদের মনিটরিং করছি যাতে বেশি দামে বিক্রি করতে না পারে।