মাদারীপুর জেলার শিবচরে বাবলাতলা এলাকার বাদশা কান্দি গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এক হিন্দু পরিবারের বাড়িতে ভাঙচুর ও গাছপালা কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১১.০০ টার দিকে রায়হান মোল্লা গ্রুপের লোকজন দরিদ্র অসহায় ওই হিন্দু পরিবারের বাড়িতে আক্রমণ করে। এ সময় বাড়ির ঘর দরজা ভাঙচুর করে,গাছপালা কেটে ফেলে, পানির কল খুলে নিয়ে যায় রায়হান মোল্লার লোকজনেরা। স্থানীয় সূএে জানা যায়, বিয়ের পর থেকেই স্বামী গৌরাঙ্গ মন্ডলের বসতভিটায় বসবাস করে আসছেন ওই গ্রামের ৫৫ বছর বয়সের বিধবা বৃদ্ধা আরতী মন্ডল। তবে সেই বসতি জমি নিয়ে প্রতিবেশী রায়হান মোল্লা গং দের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে এই হিন্দু পরিবারের সাথে। জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকলেও আজ বিপ্লব নামের এক ভাড়াটিয়া মাস্তানের নেতৃত্বে হিন্দু বাড়ীতে ভাঙচুর ও গাছপালা কেটে ফেলে রায়হান মোল্লার গ্রুপের লোকেরা।
এ বিষয়ে রায়হান মোল্লার স্ত্রী হোসনেআরা বেগম বলেন, 'এই জমি আমাদের, দীর্ঘদিন ধরে এই হিন্দু পরিবার আমাদের জমি দখল করে রেখেছে আদালতে মামলা হয়েছে আমরা সেই মামলায় রায় পেয়েছি।
প্রতিবেশী মনির মোড়ল বলেন, প্রায় শত বছর ধরে এই জমিতে বসবাস করে আসছে গৌরাঙ্গ মন্ডল। তিনি মারা যাবার পরে এখন সেই জমিতে বসবাস করছে তার বিধবা স্ত্রী ও সন্তানরা। আজ সেই জমিকে মোল্লা বংশের লোকজন দখলে নিতে আসছে। এবং বাড়িঘর ভাঙচুর গাছপালা কেটে ফেলেছে আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।
আরেক প্রতিবেশী সাইদুল সরদার বলেন, এই ঘটনার আমরা বিচার চাই। আজকে বিশ্বের কাছে মুসলমানদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।যে আমরা সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার করছি। কিন্তু কেন এই প্রশ্নের সম্মুখে আমরা হব দুই একজন মানুষের জন্য।আমরা এই ঘটনার বিচার চাই।
আরতি মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডল বলেন, এই জমি আমাদের, বেশ কয়েকবার সালিশ দরবার হয়েছে আদালতে মামলা চলমান আছে। এর আগে পুলিশ এসে আমাদের বাড়িতে ঘর দরজা তুলে দিয়েছে। আজকে অনেকগুলো লোক একসাথে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা করেছে, ঘর দরজা ভাঙচুর করছে ,গাছপালা কেটে ফেলছে। আমরা এখন অনেক ভয়ের ভিতর আছি। যেকোনো মুহূর্তেই আমাদের উপরে আরো বড় ধরনের আক্রমণ করতে পারে প্রতিপক্ষ।
কান্নাজড়িত কন্ঠে আরতী মন্ডল বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমি আমার স্বামীর বসত ভিটায় সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছি। আমাদের জমি জোরপূর্বক দখল নেবার চেষ্টার করছে মোল্লা বংশের লোকেরা। এর আগেও আমাদের এখান থেকে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করেছিল তখন পুলিশ এসে আমাদের ঘর তুলে দিয়ে ছিলো।আমরা এখন কই যাব?
শিবচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকতার হোসেন বলেন, 'আমি ঘটনাটি শুনেছি। এমন একটি ঘটনা খুবই দুঃখজনক।সেখানে পুলিশের একটি টিম পাঠাইছি বিস্তারিত জানার জন্য।তদন্ত শেষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রাজু