দল ও ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা এক থাকতে চাই

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন,  আমরা আধুনিক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই। পৃথিবীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ দেশ বানাতে চাই।  দল ও ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে আমরা  এক থাকতে চাই। দেশ জুড়ে আওয়াজ উঠেছে আমরা জীবন দেব. তবু এই মাটি কোনো হায়েনার হাতে তুলে দেব না।  এই দেশের দায়িত্ব যুব সমাজের হাতে তুলে দিতে চাই। আমাদের যুবকেরা হবে আমাদের সম্পদ। যুব সমাজই হচ্ছে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। শনিবার বিকেলে সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ জামায়েতে ইসলামী জেলা শাখা আয়োজিত এক বিশাল কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। 
কর্মীদের উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, আমাদের ওপর জুলুম করা হয়েছে, বিচারের নামে জলুম করে নেতা কর্মীদের   হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা পালিয়ে যাইনি। ওরা দেশকে  ভালো বাসে না বলেই পালিয়ে যায়। দেশকে যারা ভালোবাসে তারা পালিয়ে যেতে পারে না। এখানে শত শত মানুষ ফ্যাসিস্টের অত্যাচারে বাড়ি ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়িয়েছে। আমাদের সন্তানদের জীবনের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। কিন্তু বাংলার আকাশে কিছু শকুন ঘুরে বেড়াচ্ছে। শকুনের দিকে তীর্যক দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো শকুনকে মাটিতে নামতে দেওয়া যাবে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যেখানে কেউ চাইলেও তার অধিকার পাবে। না চাইলেও পাবে। সকলে  এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চায়, যেখানে আমার মা বোনেরা ঘরে, বাইরে এবং রাস্তাঘাটেও সুরক্ষিত থাকবে। তারা থাকবে মর্যাদার সঙ্গে।  তিনি বলেন, জনগণের সম্পদ চুরি করে ওরা পকেটে ভরেছে। বিগত ১৭ বছরে সাতক্ষীরার মানুষ সব চেয়ে বেশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে। দেশের মধ্যে সাতক্ষীরার একজন সংসদ সদস্যের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাতক্ষীরার মানুষের ওপর তারা জুলুম করেছে, খুন করেছে,পঙ্গু বানিয়েছেন, ইজ্জতের ওপর হাত দিয়েছে, সম্পদ লুটপাট করেছে। মানুষকে তারা তাদের দাসে পরিণত করেছে। সারাদেশে একই অবস্থা ছিল। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল সাতক্ষীরায়। 
জামায়াতের আমির আরও বলেন, জামায়াতে ইসলাম ক্ষমতায় গেলে কাউকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য করা হবে না। বিভিন্ন ধর্মের মসজিদ, মন্দির, গীর্জা পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। এদেশে আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে  লড়তে চাই। তিনি আরও বলেন, দেশে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সরকারি গু-াদের নামিয়ে দেশে খুনের তা-ব চালানো হয়েছে। তিনি বলেন, স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করতে দেশে বিদেশে সকলে লড়াই করেছেন।  আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখতে হবে। এই ঐক্যের কোনো ফাঁক দিয়ে যেন কেউ ঢুকে ঐক্য বিনষ্ট করতে না পারে।

এ জন্য ছাত্র-জনতা বাংলাদেশের সকল জনগণকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা কারো ফাঁদে পা দেব না।  জেলা জামায়াতের  আমির অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই কর্মী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইজ্জতউল্লাহ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, মুহাদ্দিস রবিউল বাসারসহ আঞ্চলিক ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আজিজুর রহমান।