ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬ মাঘ ১৪৩১

রামগঞ্জে মার্কেটে অনিয়ম

দুদকে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, রামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

দুদকে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ 

দুর্নীতির মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাত

রামগঞ্জে জেলা পরিষদ মালিকাধীন মার্কেট জিয়া শপিং কমপ্লেক্সে নকশা বহির্ভূত দোকান নির্মাণ ও বরাদ্দ দিয়ে, মার্কেটের নাম পরিবর্তন করে ও সংস্কার কাজে দুর্নীতির মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ হয়েছে। বৃহস্পতিবার মার্কেটে ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটি সদস্য মাসুদ আলম এসব অভিযোগের চিঠি দেন। এর আগে ১৭ সেপ্টেম্বর একই অভিযোগে জেলা পরিষদের প্রশাসকের নিকট চিঠি দিয়েছেন মার্কেটের ব্যবসায়ী পক্ষ থেকে ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক  জাকির হোসেন হেলাল।
মার্কেটের ব্যবসায়ী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজান নিজের আর্থিক সুবিধা নেওয়ার জন্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য সৈকত মাহমুদ শামছু, পৌর কাউন্সিলর মেহেদী হাসান শুভ, উপজেলা সমবায় সমিতিরি সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ভূইয়া ও তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী সায়েম হোসেনসহ কতিপয় ব্যক্তির যোগসাজশে ২০২২ সালে অবৈধভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত নকশা বহির্ভূত  মার্কেট ভবনের ৩য়তলার  কমিউনিটি সেন্টারটি ভেঙে ৮৬টি দোকান নির্মাণ করেন।

পরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে তাঁর অনুগত ব্যাক্তি ও আতœীয়স্বজনের নামে দোকানগুলো বরাদ্দ নিয়ে সরকারি কোষাগারে নামমাত্র ২ থেকে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে, প্রতিটি দোকান ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা করে অন্যত্র বিক্রি করেন। ২০২৩ সালে মূল ভবনের ১ম, ২য় ও ৩য় তলায় ২টি গেট, সিঁড়িঘর, ওয়াশরুম, লিফট রুম ও আলো বাতাসের জায়গা বন্ধ করে ৭টি মার্কেটের পার্কিংয়ের জায়গায় ৪টি ও ভবনের নিরাপত্তা দেওয়াল ভেঙে ৭টিসহ মোট ১৮টি  দোকান নির্মাণ করেন। পরে এসব দোকানও নিয়ম বহির্ভূত ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকা করে বিক্রি করে দেয়। চলতি বছরের শুরুতে মার্কেটের ৪র্থ তলায় দোকান নির্মাণের কথা বলে জিয়া শপিং কমপ্লেক্সে নাম পরিবর্তন করে রামগঞ্জ শপিং কমপ্লেক্স নামে অতি গোপনে ৮৪টি দোকান বরাদ্দ দেয়।

এ ছাড়া বিগত তিন বছর মার্কেটের কোনো সংস্কার কাজ না করেও সংস্কারের নামে শুধু কোটেশনের মাধ্যমে ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। মার্কেটের ৩য় তলায় নির্মিত ১ কোটি ব্যয়ে কমিউনিটি সেন্টারটি নিলাম না দিয়ে বিক্রি করে টাকা আতœসাৎ করেন। মার্কেটের পাশে ৫ লক্ষাধিক টাকার গাছ নিলাম না দিয়ে কেটে নেয়। এভাবে  জেলা পরিষদের  চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজান জিয়া শপিং মার্কেট থেকে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। ব্যবসায়ী পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক জাকির হোসেন হেলাল, সদস্য মাসুদ আলম বলেন, মোহাম্মদ শাহাজান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যহার করে নকশা বহির্ভূত, ফায়ার এক্সিট গেট বন্ধ করে, নিরাপত্তা দেয়াল ভেঙে,পাকিং স্থানে, ৩য় ও ৪র্থ তলায় অতিরিক্ত দোকান নির্মাণে মার্কেটি ঝুঁকিপূর্ণ ও সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে।

এ ছাড়া তিনি মার্কেটের সংস্কারকাজ না করে, দোকান বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে সরকারি খাতে নাম মাত্র টাকা জমা দিয়ে কোটি কোটি টাকা আতœসাৎ করেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ শাহাজানের সঙ্গে বক্তব্যের জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি এবং তাঁর মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আলোকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

×