ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নাটোরে কুমড়া’র বড়ি তৈরি করে স্বাবলম্বী ৮ নারী উদ্যোক্তা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নাটোর

প্রকাশিত: ১৬:০২, ৩০ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৬:৩৩, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

নাটোরে কুমড়া’র বড়ি তৈরি করে স্বাবলম্বী ৮ নারী উদ্যোক্তা

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ‘পুন্ডরী’ চলনবিল অধ্যুষিত একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। এই গ্রামের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার দুপাশে ছোট ছোট টিনের চালায় রোদে শুকানো হচ্ছে হলুদ রঙের কুমড়ার তৈরী বড়ি। ভেজানো ডাল মেশিনে ভাঙিয়ে সেই ডালে পানি, কালোজিরা ও অন্যান্য মসলা মিশিয়ে তৈরী করা হচ্ছে বড়ি। পরে তা টিনের চালের প্রয়োজনমত শুকিয়ে বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। শীতকাল এলেই সিংড়া উপজেলার কলম ইউনিয়নের পুন্ডরী গ্রামে গেলে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে। শীতকালে কুমড়ার বড়ির চাহিদা থাকায় কুমড়ার বড়ি বিক্রি করে বাড়তি আয়ের মুখ দেখছেন এই গ্রামের কয়েকজন নারী উদ্যেক্তা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুন্ডরী গ্রামে ৮জন নারী উদ্যেক্তা রয়েছেন। তারা সকলেই বাড়ীর উঠোনে বসে কুমড়ার বড়ি তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। যেন দম ফেলার ফুসরত নেই। সাধারণ কার্তিক মাস থেকে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত এ কাজে তারা কুমড়ার বড়ি তৈরী করে থাকেন। মৌসুমি এ পেশায় জড়িত অনেকেরই সংসারে ফিরেছে স্বচ্ছলতা। বদলে গেছে একসময়ের অভাব-অনটন সংসারের হালচিত্র। 

নারী উদ্যোক্তারা জানায়, সব খরচ বাদে মৌসুমে এক লাখ  থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হয় তাদের। ডালের সাথে কালোজিরা, সয়াবিন সহ নানা উপকরণ মিশিয়ে কুমড়োবড়ি তৈরী করা হয়। প্রতি কেজি কুমড়া বড়ি তৈরী করতে তাদের খরচ হয় ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। বাজারে পাইকারী বিক্রি হয় ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা। খুচরা বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। এতে খরচ বাদে প্রতি কেজিতে লাভ হয় ৩০ থেকে ৫০ টাকা। 

পুন্ডরী গ্রামের নারী উদ্যেক্তা রাশেদা বেগম জানান, বিয়ের আগে বাবার বাড়ীতে কুমড়ার বড়ি তৈরীর কাজ শেখেন তিনি। বিয়ের পর সংসারে অভাব দেখা দিলে কুমড়ার বড়ি তৈরীর কাজ শুরু করেন। প্রথমে অল্প পরিমাণ বড়ি তৈরী করে বাজারে বিক্রি করে লাভের মুখ দেখেন। পরে তিনি বানিজ্যিকভাবে বড়ি তৈরীর কাজে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি ৫০ থেকে ৬০ কেজি ডালের কুমড়া বড়ি তৈরী করেন। রাশেদার সফলতা দেখে একই গ্রামের অন্য নারীরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এ কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। 

রাশেদা বেগম ছাড়াও পুন্ডরী গ্রামের নুরজাহান বেগম, আলেয়া বেগম ও কাজলী বেগম সহ ৮ নারী উদ্যোক্তা  এখন কুমড়া বড়ি  তৈরী করে সংসারের বাড়তি আয় করছেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২’শ কেজি থেকে আড়াই’শ কেজি ডালের কুমড়া বড়ি তৈরী করছেন তারা। 

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারু ইসলাম জানান, বাঙালির খাদ্য তালিকায় কুমড়া বড়ি বেশ জনপ্রিয়। উন্নতবাজার ব্যবস্থা ও কারিগরি সহযোগিতা পেলে গ্রামের নারী উদ্যোক্তারা  আরো বেশি উৎসাহী হয়ে এই কাজে আত্মনিয়োগ করবে।

নাহিদা

×