আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যেতে থাকা বাঁশ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার।
বাঁশ থেকে তৈরি ডালা, কুলা, চালুন, খইচালা, জালি, ঝাপনি, চাঙ্গারি, বাচ্চাদের ছোট কুলাসহ হরেক রকম পণ্য বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করে জীবিকার পাশাপাশি ওইসব পরিবারগুলো দেশীয় ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন।
বাঁশ বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, এখন মানুষ বিল্ডিংয়ের প্রতি ঝুঁকে পরেছেন। তাই বাঁশ ব্যবহার দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। যেকারণে সবুজ কালারের বাঁশ এখন শুকিয়ে সাদা হয়ে নষ্ট হওয়ার পথে।
তিনি আরও বলেন, আগে প্রতিদিন বিশ থেকে ত্রিশ হাজার টাকার বাঁশ বিক্রি করেছি। বর্তমানে দিনে হাজার টাকাও বিক্রি হচ্ছেনা।
আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর বাজারে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন পন্য বিক্রেতা প্রতুল বাগচী বলেন, অতীতে গ্রামগঞ্জে বাঁশের তৈরি পণ্য সামগ্রীর ব্যাপক কদর ছিলো। এসব পণ্য শোভা পেত প্রত্যেকের বাড়িতে।
সে সময় বাঁশের তৈরি তৈজসপত্রই ছিল সংসারের মূল ভরসা। তিনি আরও বলেন, কালের পরিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বাঁশ শিল্পে ভাটা পরেছে।
প্রযুক্তির ব্যবহার ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন প্লাস্টিক জাতীয় পণ্যের ছোয়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে বাঁশ শিল্প।
তিনি আরও জানান, জীবিকার তাগিদে পূর্ব পুরুষের এ পেশাকে তিনিসহ উপজেলার প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার আজও আঁকরে রেখেছেন।
বাঁশ শিল্পের কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ পেশার সাথে জড়িত পুরুষরা গ্রামঘুরে বাঁশ ক্রয়ের পর তা আকার অনুযায়ী কেটে বাড়িতে নিয়ে আসেন। কেটে নেয়া অংশ থেকে বাঁশের পাতলা ও চিকন চাঁচ তৈরি করে তা দিয়ে ডালা, কুলা, চালুনসহ বিভিন্ন পন্য সামগ্রী তৈরি করা হয়।
আর এসব পন্য তৈরিতে বাড়ির নারী সদস্যরা সহযোগিতা করে থাকেন।
সূত্রে আরও জানা গেছে, একজন কারিগর প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি বড় মাপের ডালি তৈরি করতে পারেন। পাইকারদের কাছে প্রতিটি ডালা বিক্রি করা হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকা। আর খুচরা বাজারে এসব ডালা বিক্রি করা হয় ১২০ টাকা করে। এছাড়া প্রতি পিস কুলা ১০০ টাকা, চালুন ৮০ টাকা, ঝাঁপি ৪০ টাকা মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে।
নুসরাত