ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

পরিবেশ বিপন্ন

মির্জাপুরে তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ৭ ইটভাঁটি

নিজস্ব সংবাদদাতা, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

মির্জাপুরে তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ৭ ইটভাঁটি

নতুন করে আর কোনো ইটভাঁটি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হবে না

নতুন করে আর কোনো ইটভাঁটি নির্মাণের অনুমোদন দেওয়া হবে না। এ রকম বক্তব্য ও নির্দেশনা বার বার দিয়ে আসছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। অনুমোদনহীন অবৈধ ইটভাঁটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন তিনি একাধিকবার। পরিবেশ রক্ষায় উপদেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ এ রকম সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মির্জাপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ও ছাড়পত্র না নিয়েই আবাদি জমির ওপর সাত মালিক ৭টি ইটভাঁটি নির্মাণ করে ইট পোড়ানো শুরু করেছেন। অবৈধ ওই ভাঁটিতে কমপক্ষে ১২শ’ একর আবাদি তিন ফসলি জমি ব্যবহার করা হয়েছে।
জানা গেছে, মির্জাপুর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ও একটি পৌরসভায় গতবছর পর্যন্ত মোট ইটভাঁটির সংখ্যা ছিল ১০১টি। এ বছর সরকারের অনুমোদন না নিয়েই আরও সাতটি ইটভাঁটি নতুনভাবে স্থাপিত হওয়ায় সংখ্যা দাঁড়াল ১০৮টি। ওই অবৈধ ৭টি ভাঁটির ইট তৈরি ও পোড়ানো শুরু হয়েছে। এছাড়া ওইসব অবৈধ ইটভাঁটিয় খুঁটি স্থাপনের মাধ্যমে বৈদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হচ্ছে। অনুমোদনহীন ইটভাঁটিগুলো হলো উপজেলার বহুরিয়া গ্রামে আরবিসি ব্রিকস, এমএসবি ব্রিকস, বাটা ব্রিকস, চান্দুলিয়া গ্রামে এইচইউবি ব্রিকস, গোড়াই ইউনিয়নের দেওহাটা মল্লিকপাড়া গ্রামে সনি ব্রিকস, দেওহাটা পাথালিয়াপাড়া গ্রামে বিঅ্যান্ডবি ব্রিকস, দেওহাটা ও বাইমহাটি গ্রামে রান ব্রিকস। প্রতিটি ভাঁটিতে কমপক্ষে ১৫  থেকে ২০ একর  আবাদি জমি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এইচইউ ব্রিকসের অংশীদার মনির হোসেন বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন আমরা এখনো পাই নাই। অন্য কাগজপত্র তাদের আছে বলে তিনি জানান। এদিকে মির্জাপুর উপজেলায় বন ও বসতি এলাকায় এবং আবাদি জমিতে যত্রতত্রভাবে ইটভাঁটি নির্মাণ হওয়ায় একদিকে  ফসলি জমি কমে খাদ্য ঘাটতির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে, অপরদিকে হুমকির মুখে পড়েছে পরিবেশ ও কৃষি আবাদ। প্রতিবছর ইটভাঁটির ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে জমির ফসল ও সবজি। বাইমাইল গ্রামের কৃষক শাহজাহান সিরাজ নূর বলেন, তিন ফসলি জমি ধ্বংস করে অবৈধভাবে ইটভাঁটি গড়ে উঠছে।

এতে কৃষি আবাদ এখন হুমকির মুখে পড়েছে। ফলদ গাছের ফল কালো হয়ে ঝরে পড়ে, নষ্ট হচ্ছে সবজি বাগান। টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুুদুল হক বলেন, মির্জাপুরে অবৈধভাবে গড়ে উঠা ইটভাঁটিগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। এই ইটভাঁটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইনফোর্সমেন্ট শাখায় সুপারিশ পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

×