ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

রেললাইন ঘেঁষে বহুতল ভবন নির্মাণ!

নিজস্ব সংবাদদাতা, সৈয়দপুর

প্রকাশিত: ১৬:৫৮, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

রেললাইন ঘেঁষে বহুতল ভবন নির্মাণ!

বহুতল ভবন।

কোন অনুমোদন ছাড়াই সৈয়দপুরে প্রকাশ্যে রেললাইন ঘেঁষে নির্মাণ করা হচ্ছে বহুতল ভবন। এতে দূর্ঘটনার ঝুঁকি থাকলেও অজ্ঞাত কারণে কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ।
আর এমন দৃশ্যর অবতারণা হয়েছে সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেটের পশ্চিমের রেলপথ এলাকায়। সেখানে রেল লাইনের ঘেঁষে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি বহুতল দোকানঘর। এর আগে লাহোর টেইলার্স নামের  ওই দোকান ঘরটি ছিল টিনসেড। সেটি ৩৫ লাখ টাকার বিনিময়ে দখলে নিয়ে আরসিসি পিলার দিয়ে দোতলা ভবন করা হচ্ছে।
আরও জানা যায়, ওই দ্বীতল ভবন নির্মাণের আগে দখলকারী স্থানীয় এক হোটেল ব্যাবসায়ীর কাছে ৫ লাখ টাকা জামানত নিয়েছে। তাকে জনৈক রেলের জায়গা দখলকারী মাসিক ২২ হাজার টাকা ভাড়ায় দেবে। এমন চুক্তিতে দিনে-রাতে কাজ করা হচ্ছে ভবনের। এর আগে ওই দোকান ঘরটি লে লাইন থেকে দশ হাত দুরে ছিল। এখন দুরত্ব কমিয়ে রেল লাইনের আরও কাছে নির্মাণ কাজ করছেন বেদখলকারী। এতে রেললাইন এলাকা ঝুঁকিপুর্ণ হলেও এর দায়িত্বরত পিডাব্লিও সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা, ভূসম্পত্তি বিভাগ ও রেলওয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডাব্লু) রয়েছে চুপচাপ। জানতে চাইলে বহুতল ভবন নির্মাণকারী সাজু মিয়া বলেন, দোকানটি কিনে রেলওয়ের পাকশি স্টেট অফিস থেকে নিজ নামে বরাদ্দ লাইসেন্স করেছি। তাই নির্মাণ করছি। বিষয়টি স্থানীয় রেলওয়ের সকলে জানেন। অবৈধ হলে তারা বাধা দিত।
অভিযোগ রয়েছে, রেলওয়ের স্থানীয় কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের ম্যানেজ করে এই বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। যে কারণে নানা অজুহাতে কর্তৃপক্ষ নির্বিকার ভূমিকায় রয়েছে। ভবনটি নির্মাণ সম্পন্ন হলে দক্ষিণ দিকের আউটার সিগন্যাল দেখা যাবে না। এতে ট্রেন চালকরা সমস্যায় পরবেন। তাতে দূর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।
এ নিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের জায়গায় কোন স্থাপনা নির্মাণ হলে তা দেখার  দায়িত্ব মূলতঃ পাকশীর রেলওয়ে এস্টেট ডিপার্টমেন্টের এবং স্থানীয় এইএন, আইওডাব্লু বিভাগের। এতে শুধু অবৈধ কাজ বন্ধের প্রয়োজনে সহযোগিতা করতে পারি।
এ নিয়ে সৈয়দপুর রেলওয়ে ট্রাফিক বিভাগ তথা ওপেন লাইন শাখার কর্মকর্তা সুলতান মৃধা বলেন, ট্রেন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা হলে নিয়মিত অভিযান করা হয়। তবে রেল লাইন ঘেঁষে ভবন বা দোকান নির্মাণ বিষয়টি জানা নেই।
রেলওয়ে ভূসম্পত্তি বিভাগের সৈয়দপুরে দায়িত্বরত উপ-সহকারী প্রকৌশলী (আইওডাব্ল) মো:  শরিফুল ইসলাম বলেন, দোকানটি নির্মাণের খবর পেয়ে নিষেধ করা হয়েছে। তারপরও কাজ চলছে। লোকবলের অভাবে এই অবৈধ কাজ বন্ধ করতে পারছিনা। উপর মহলে জানিয়েছি। প্রয়োজনীয় নির্দেশ পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
তবে স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান লোক দেখানো। এতে এ শহরের রেলের সম্পদ দিন দিন বেদখল হচ্ছে তাদেরই সহায়তায়। তাই বর্তমান সরকারের রেল উপদেষ্টার কাছে জোড় দাবী জানান এ ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধসহ রেলের এ শহরের সকল বেদখল স্থাপনা সম্পত্তি অবমুক্তের যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়ার।

 

আর কে

×