ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি

দখল-দূষণে ভরাট নদী ও খাল

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৬:৫৭, ২৯ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৬:৫৮, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

দখল-দূষণে ভরাট নদী ও খাল

দখলে সরু হয়ে যাওয়া একসময়ের খরাস্রোতা টরকীর খাল ( বামে), ময়লা ফেলে দখল- ছবি: জনকন্ঠ।

অবৈধ দখল আর দূষণে ভরাট হয়ে যাচ্ছে বরিশাল জেলার প্রবেশদ্বার গৌরনদী উপজেলার নদী ও খাল। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে জীববৈচিত্র্যের ওপর। পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়েছে কৃষি কাজ। 

 

ইতোমধ্যে এ উপজেলায় বন্ধ হয়ে গেছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির বোরো চাষ।

আজ শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) সকালে সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আড়িয়াল খাঁর শাখা পালরদী নদী, উপজেলা সদরের গয়নাঘাটা-চাঁদশী, গৌরনদী বন্দর আশোকাঠী, দক্ষিণ পালরদী, মাহিলাড়া, বাটাজোড়, সরিকল, নলচিড়া গরঙ্গল, ভুরঘাটা-টরকী চেংগুটিয়া-রামসিদ্ধি, বার্থী, খাঞ্জাপুরসহ প্রায় সব খালের উভয় তীর দখল করে প্রভাবশালীরা গড়ে তুলেছেন ঘরবাড়ি, দোকানপাটসহ নানা অবৈধ স্থাপনা। 

অনেক জায়গায় ময়লা-আবর্জনা ফেলে কৌশলে দখল করে নেওয়া হয়েছে। 

এরমধ্যে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে এক সময়ের খরস্রোতা টরকী বন্দরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত দুইটি খাল। অবৈধ দখলদারদের দৌরাত্ম আর নাব্যতা সংকটের কারনে চরম হুমকিতে রয়েছে আড়িয়াল খাঁর শাখা পালরদী নদী।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ উপজেলায় ৩৩টি খাল ও একটি নদী রয়েছে। কাগজে-কলমে খালের অস্তিত্ব থাকলেও অবৈধ দখলদারদের কারনে অনেক খালের আজ অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা। যাওবা রয়েছে তাহাও সঠিক তদারকির অভাবে আজ অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। 

আড়িয়াল খাঁ নদের শাখা পালরদী নদীটি রয়েছে নাব্যতা সংকটে। যে কারনে শীত মৌসুমে নদী পথে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম তৈরি হয়েছে।
টরকী বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বন্দরের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত দুইটি খালে একসময় নৌকায় পণ্য পরিবহন করা হতো। নানাবিধ কারনে সেই খালটি ভরাট হয়ে গেছে। টরকী বন্দর ঘেষা পালরদী নদী শুকিয়ে গেছে। অথচ এই নদী পথে মাদারীপুর, মুলাদী ও স্বরুপকাঠীসহ বিভিন্ন এলাকায় নৌ-পথে বাণিজ্য করে থাকে টরকী বন্দরের ব্যবসায়ীরা। 

ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে নদী ও খাল খননের জন্য সংশ্লিষ্টদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান করেছেন।
চাঁদশী এলাকার একাধিক কৃষকরা জানিয়েছেন, উপজেলা সদরের গয়নাঘাটা-চাঁদশীর জনগুরুত্বপূর্ন খালের মুখে স্লুইজগেট নির্মান করা হয়েছে। সেই স্লুইজ গেটের ওপর স্থাপনা গড়ে ওঠায় খালের পানি প্রবাহ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে।

এছাড়াও খালের দুই পাশে অবৈধ দখলদারদের কারনে সরু হয়ে গেছে এসময়ের বিস্তৃর্ণ এ খালটি। যেকারণে ওই খালের ওপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার চাষীর জমিতে দীর্ঘদিন থেকে বোরো চাষ বন্ধ হয়ে গেছে। 

ওই খালের ওপর নির্ভরশীল কয়েকশ’ চাষী অতিসম্প্রতি খালের মুখে নির্মিত স্লুইজগেট অপসারনসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। 

এছাড়াও উপজেলার অন্যান্য খালগুলো দীর্ঘদিন যাবত খনন না করায় শীত মৌসুমে শুকিয়ে থাকে। যার প্রভাব পড়ছে কৃষিতে। পাশাপাশি জীববৈচিত্র্যের পাশাপাশি দেশীয় মাছের আবাসস্থল ধ্বংস হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. আবু আবদুল্লাহ খান বলেন, মাছে-ভাতের বাঙালির ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় সুশীল সমাজের মতামতের ভিত্তিতে নদী ও খালের পাশ থেকে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের জন্য খুব শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এমএম

×