কুমিল্লার হোমনায় দুপুরের খাবার দিতে দেরি করায় সেনোয়ারা বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে সৎ ছেলের বিরুদ্ধে।
গতকাল বৃহস্পতিবার(২৮ নভেম্বর) বিকেল চারটার দিকে উপজেলা শ্রীনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর রাতে অভিযান চালিয়ে ঘাতক ছেলে মোফাজ্জল হোসেন বেনু মিয়া (৩৭) কে আটক করে পুলিশ।
এলাকাবাসী জানায়, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ২০০৯ সালে সেনোয়ারা বেগমকে বিয়ে করেন উপজেলার চাঁন্দেরচর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামের আবুল কাশেম। আবুল কাশেমের প্রথম স্ত্রীর ঘরে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।
জানা যায়, ছেলে মোফাজ্জল হোসেন সৎ মাকে দুপুরের খাবার দিতে বলে। এ সময় একটু অপেক্ষা করতে বললে এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মোফাজ্জল হোসেন বেনু মিয়া লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে সেনোয়ারা বেগমকে গুরুতর আহত করে। আহত অবস্থায় তাকে পার্শ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা প্রেরণ করা হয়।
ঢাকা নেওয়ার পথে রাত দশটার দিকে সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনা সেতু এলাকায় সে মারা যায়। পরে স্বজনরা লাশ হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ নিয়ে আসলে পুলিশ এসে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের সৎ বড় ছেলের স্ত্রী হ্যাপি আক্তার জানান, বিকেলে হঠাৎ করে চিল্লাচিল্লির আওয়াজ শুনতে পাই। এ সময় কয়েকজন এসে আমার দেবরকে শান্ত করার চেষ্টা করে। এরপর আমার শাশুড়িকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখি। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় আমরা রামচন্দ্রপুরে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার পথে মেঘনা সেতুতে পৌঁছালে তিনি মারা যান।
নিহতের বড় বোনের ছেলে কবির হোসেন জানান, আমার খালাতো ভাই ফোন করে আমার ছোট ভাইকে বলে আমার খালা অসুস্থ। আমি প্রথমে হোমনায় পরে গৌরীপুর গিয়ে খালার সাথে ঢাকা যাওয়ার পথে মেঘনা সেতু এলাকায় গেলে খালা মারা যায়। পরে আমরা খালাকে নিয়ে হোমনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে আমার খালাকে মৃত্যু ঘোষণা করে। শুনেছি বিকেলে আমার খালাকে তার সৎ ছেলে মোফাজ্জল হোসেন বেনু মিয়া পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে ফেলে। এ ঘটনায় নিহতের সৎ ছেলের বউ হোসনে আরা বেগম বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হোমনা থানার অফিসার ইনচার্জ জাবেদ উল ইসলাম জানান, বৃদ্ধার নিহতের ঘটনা খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে তার ছেলে মোফাজ্জল হোসেন বেনু মিয়াকে রাতে আটক করি। লাশ ময়না তদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘাতক মানুষিক ভাবে অসুস্থ।
এমএম