চিকিৎসক না আসায় জনমানবহীন অবস্থায় পড়ে থাকে কমিউনিটি ক্লিনিক
দেশের বৃহত্তম উপজেলা ফটিকছড়ির স্বাস্থ্য সেবা চলছে জোড়াতালি দিয়ে। উপজেলার বিভিন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সেবায় জনদুর্ভোগ লাঘব করতে অধিকাংশ স্থানীয় দাতাদের জায়গায় নির্মিত ৫৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ২০টির অবস্থা খুবই করুন। কোনো কোনো ক্লিনিকে চিকিৎসক না যাওয়ায় রোগীরা সারাক্ষণ অপেক্ষা করে চলে আসতে বাধ্য হয়। ওষুধ না পাওয়া, চিকিৎসকের জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষাসহ নানা কারণে এ উপজেলার চিকিৎসা সেবা ভেঙে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ২৫-৩০ বছর আগে নির্মিত জরাজীর্ণ ভবনে চালানো হচ্ছে চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম। ঝুঁকিপূর্ণ ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক উপজেলার বাগান বাজার, নারায়নহাট, ভূজপুর ও খিরাম ইউনিয়নের দুর্গম এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে অবস্থিত বলে জানা যায়। এ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট উপরি মহলে লিখিতভাবে জানালেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
দাঁতমারা ইউনিয়নের বাসিন্দা মুহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আয়তনের চেয়ে বড় এ ইউনিয়নে চিকিৎসা সেবা খুবই কম মানুষে পাচ্ছে। ইউনিয়নের হেয়াঁকো সরকার পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে সপ্তাহে ৫ দিন চিকিৎসক আসেন। তবে ওষুধ সীমিত হওয়াতে বাহির থেকে ও ওষুধ ক্রয় করে রোগীরা। লেলাং ইউনিয়নের বাসিন্দা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম জানান, প্রায়ই এখানকার কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ থাকে। খোলা থাকলে প্রচুর রোগী হয়। তিনি জনবহুল লেলাং ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিদিন খোলা রেখে মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে জানান। ধর্মপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের অবস্থিত আজাদী বাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবা প্রাপ্তি রীতা দাশ জানান, সিকিৎসক প্রায়ই দেরিতে আসেন। অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। ২টার পর গেলে তো চিকিৎসককে পাওয়াই যায় না। ফিরে যেতে হয় অনেক রোগীকে। এই নিয়ে উক্ত কমিউনিটি ক্লিনিকের সভাপতি স্থানীয় মেম্বার আবুল হাসেম জানান, সিএইচসিপির বাড়ি দূরে হওয়াই উনার আসা-যাওয়াই একটু দেরি হয়। স্থানীয় কাউকে নিয়োগ দেওয়া হলে ভালো হতো। এছাড়া সেবা নিয়ে রোগীরা সন্তুষ্ট বলে তিনি জানান।
জানতে চাইলে ক্লিনিকের কমিউনিট হেলথ কেয়ার প্রোভাউটার মুহাম্মদ ফরহাদ উদ্দিন জানান, ওষুধ ও জনবল সংকটসহ উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বিভিন্নমুখী সমস্যা রয়েছে। ৬ মাস ধরে সিএইচসিপিগণ বেতন পাচ্ছে না। অথচ ক্লিনিকগুলোতে গ্রামীণপর্যায়ের জনসাধারণের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। ফলে নানাবিধ সমস্যার কারণে স্থানীয়দের কাছে ক্লিনিকগুলোর বদনাম হচ্ছে। জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম জানান, দৈনিক গড়ে ৫০-৬০ জন রোগী উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিক হতে সেবা নিচ্ছেন। এতে রোগীরা সন্তুষ্ট। জরাজীর্ণ ২০টি কমিউনিটি ক্লিনিক এবং সিএইচসিপি নিয়োগের ব্যাপারে আমি চিঠি পাঠিয়েছি আশাকরি খুব শীঘ্রই কাজ হবে। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আমার তদারকিতে আছে। এরপরও যেসব কমিউনিটি ক্লিনিকের ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে, তা আমি কঠোর হাতে দমন করব।