“শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ” এমন শ্লোগান লিখা বিদ্যুৎ বিল আমতলী উপজেলার ৬২ হাজার গ্রাহকের কাছে পৌছে দিচ্ছে উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিস। গ্রাহকদের অভিযোগ আমতলী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে এখনো শেখ হাসিনার এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী দুষ্টুচক্র বসে আছেন। তারা শেখ হাসিনার নাম ঘরে ঘরে প্রচার করছেন। এ শ্লোগান লেখা বিল নভেম্বর মাসের গ্রাহকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে। এতে গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত এ চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী গ্রাহকদের।
জানাগেছে, গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেষ হাসিনা দেশ ত্যাগ করছে। তার দেশ ত্যাগের পর সব কিছুর পরিবর্তন হলেও আমতলী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের কোন পরিবর্তন হয়নি। তারা শেখ হাসিনার এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। প্রতি মাসের বিদ্যুত বিলে উপজেলার ৬২ হাজার গ্রাহকদের কাছে শেখ হাসিনার বার্তা পৌছে দিচ্ছেন। বিল কাগজের শুরুতেই শ্লোগান লেখা রয়েছে “শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ”। গ্রাহকদের অভিযোগ ফ্যাসিষ্ট শেষ পালিয়ে গেলেও তার এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী আমতলী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের দুষ্টুচক্র রয়ে গেছে। পল্লী বিদ্যুতের অফিসের কর্মকর্তাদের এমন কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ আমতলী উপজেলার ৬২ হাজার গ্রাহক। দ্রুত তারা পল্লী বিদ্যুতের দুষ্টুচক্র শেখ হাসিনার এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তারা। খোজ নিয়ে জানাগেছে , আমতলী উপজেলার মতনই তালতলী উপজেলায়ও একই অবস্থা। তালতলী সাব-জোনাল অফিসের ২৮ হাজার গ্রাহকদের ঘরে ঘরে শেখ হাসিনার এমন বার্তা পৌছে দিচ্ছেন পল্লী বিদু্যুৎ কর্তৃপক্ষ। গত নভেম্বর মাসেরও পল্লী বিদ্যুৎ কর্র্তৃপক্ষ এ শ্লোগান দেয়া বিদ্যুৎ বিল সরবরাহ করছেন। এতে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
গ্রাহক রিপন মুন্সি বলেন, শেখ হাসিনার পতন হলেও আমতলী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস কর্তৃপক্ষের তার দোসরা বসে আছেন। তারা শেখ হাসিনার বার্তা ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন। ওই অফিসের শেখ হাসিনার এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
আমতলী পৌর শহরেরর গ্রাহক সফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমতলী পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিস কর্তৃপক্ষ শেখ হাসিনার বার্তা ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের এমন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
তালতলী বন্দরের গ্রাহক আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সাড়ে তিন মাস হয়ে গেলে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। কিন্তু তার দোসরদের পতন হয়নি। তারা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে বসে শেখ হাসিনার শ্লোগান ঘরে ঘরে পৌছে দিচ্ছেন। এতে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে বিভিন্ন দপ্তরে বসে আছেন। তাই তারা শেখ হাসিনার নাম প্রচারে ব্যস্ত। তিনি আরো বলেন, আমতলী পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসে শেখ হাসিনার এ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা এমন কাজ করছেন।এদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
তালতলী পল্লী বিদ্যুতের সাব-জোনাল অফিসের এজিএম সুমন সাহা বলেন, এখানে আমার কি করার আছে? পল্লী বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়ের ওয়েব সাইটের হোম পেইজে এখনো মুজিব শতবর্ষ ও শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ লেখা শ্লোগান রয়েছে। তারাইতো এখানো মুছে ফেলেনি। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে যে বিল কাগজ যাচ্ছে তাতে ওই শ্লোগান মুছে ফেলা হচ্ছে।
আমতলী পল্লী বিদ্যুতের জোনাল অফিসের এজিএম মোঃ হোসেন আলী বলেন, আগের ছাপানো কাগজে বিদ্যূৎ বিল করা হচ্ছে। তাই শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ শ্লোগান লেখা কাটা হয়নি।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের জিএম তুষার কান্তি মন্ডল বলেন, ছয় মাস আগে টেন্ডারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল কাগজ তৈরি করা হয়েছে। ওই বিল কাগজগুলোএখনো শেষ হয়নি। ওই কাগজগুলোতে বিল সরবরাহ করা হচ্ছে। কাগজগুলো শেষ হয়ে গেলে আর ওই শ্লোগান থাকবে না। তিনি আরো বলেন, পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুতের অধিনে ৭ লক্ষ গ্রাহক। বিল কাগজগুলোতে বিল প্রস্তুত না করলে অনেক লোকসান হয়ে যাবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ওই শ্লোগান পরিবর্তন করা হবে।