চিত্রা নদীর দু’পাড় দখল করে এভাবেই গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা
দখলদারদের দখলে চলে গেছে চিত্রা নদী। দু’পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক অবৈধ স্থাপনা। ঝিনাইদহে ১২টি নদী রয়েছে। এর মধ্যে চিত্রা নদী অন্যতম। এর কালীগঞ্জ অংশে ৬২টি, কোটচাঁদপুরের লক্ষ্মীপুর বাজারে ১১টি ও একই উপজেলার ধোপাবিলা গ্রামে ২১টি অবৈধ স্থাপনা ও পুকুর রয়েছে। একইভাবে ঝিনাইদহ জেলার মধ্যে ৯৪টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। ফলে এক সময়ের প্রমত্তা নদী চিত্রা তার যৌবন হারিয়ে মৃতপ্রায়। দখল ও দূষণ রোধে চিত্রা নদীর দুই ধারে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা অপসারণের উদ্যোগ নিয়েছে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পানি সম্পদ উপদেষ্টার নির্দেশে ইতোমধ্যে দখলবাজদের চিহ্নিত করে তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
আগামী বছরের শুরুতে চিত্রা নদীর বুকে গজিয়ে ওঠা স্থাপনা ও পুকুর উচ্ছেদ করা হবে বলে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে। চিত্রা নদী দখলমুক্ত হলে এক সময়ের প্রমত্তা নদীটি আবারও প্রাণ ফিরে পেতে পারে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদরা।সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঝিনাইদহ অংশে বেশিরভাগ নদী জুড়েই অবৈধ স্থাপনা ও শত শত পুকুর রয়েছে। নদীর তীরবর্তী বাজার এলাকায় অবৈধ দোকানপাট ও বাড়িঘর তৈরি করেছে দখলবাজরা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না, জিয়ানগর, বংকিরা, হাজরা, লক্ষ্মীপুর, মোহাম্মদপুর ও গোবিন্দপুর এলাকায় নদীবক্ষে পুকুর কেটে মাছ চাষ করা হচ্ছে। কোটচাঁদপুরের তালসার, ইকড়া, কালীগঞ্জ শহরের পুরাতন বাজার, বলিদাপাড়া, হেলাই, নিমতলা, নদীপাড়া ও ফয়লা এলাকায় দখল হয়ে গেছে চিত্রা। নদীর বুকে চাষাবাদ করছে মানুষ।
ঝিনাইদহের মানবাধিকার কর্মী অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান টুকু জানান, চিত্রা নদীর অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত খুবই যুগান্তকারী। জেলার নদ-নদীগুলো বাঁচানোর এখনই উপযুক্ত সময়। কারণ রাজনৈতিক সরকারের আমলে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা থাকে। ফলে প্রভাবশালীদের নগ্ন হস্তক্ষেপে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমুর দাস জানান, প্রতিটি জেলায় একটি করে নদী দূষণ ও দখল মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই হিসেবে ঝিনাইদহ জেলায় চিত্রা নদীকে বেছে নেওয়া হয়েছে।