ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

মেরামত না হওয়ায় প্রায় দুই বছর বন্ধ চাঁদপুর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, চাঁদপুর

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ২৬ নভেম্বর ২০২৪

মেরামত না হওয়ায় প্রায় দুই বছর বন্ধ চাঁদপুর বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র

বিদ্যু সরবরাহ কমায় শীত মৌসুমের শুরুতেও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তিতে চাঁদপুরবাসী। অথচ সংকট সমাধানে দেশের বিদ্যু কেন্দ্রগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। নিয়মিত মেরামতের জন্য বন্ধ হলেও প্রায় দুই বছর বন্ধ রয়েছে চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যু ৎপাদন কেন্দ্র। তবে চলতি বছরের শেষে কেন্দ্রটি চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানালেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সরেজমিন দেখাগেছে, ঢেকে রাখা হয়েছে চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যু ৎপাদন কেন্দ্রের স্টিম টারবাইন ইউনিটের যন্ত্রগুলো। দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায় এসব যন্ত্রাংশগুলো অনেকটা অবহেলিত অবস্থায় পড়ে আছে। দীর্ঘদিন এসব যন্ত্রাংশ ব্যবহার না করলে অকার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান প্রকৌশলীরা।

শহরের গুনরাজদির বাসিন্দা মোস্তফা কামাল এবং খান সড়কের বাসিন্দা সালাউদ্দিন জানান, বিগত বছরগুলোতে শীতের আগ থেকেই লোডশেডিং কমেছে এবং শীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যু সরবারহ ছিল। তবে বছর শীতের আগ থেকেই দিন রাতে লোডশেডিং অব্যাহত। এমন পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে শহরের পাদনমুখী কারখানা গ্রামের সেচ কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

বিদ্যু কেন্দ্রের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা জানান, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে নিয়মিত রক্ষাবেক্ষণের অংশ হিসেবে ১৫০ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। পুনরায় ২০২৩ সালের মার্চে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বুস্টার যন্ত্রটিও বন্ধ হয়ে যায়। দুই দফা মেরামত দেড় বছর বন্ধ থাকার পর চলতি বছর মে মাসে ফের ৎপাদনে আসে ১০০ মেগাওয়াটের গ্যাস টারবাইন ইউনিটটি। তবে গ্যাসের অভাবে শতভাগ ৎপাদনে যেতে পারছে না ইউনিটটি। আর দুই বছরেও মেরামত সম্পন্ন না হওয়ায় বন্ধ রয়েছে ৫০ মেগাওয়াটের স্টিম টারবাইন ইউনিট।

ৎপাদনে কর্মরত কর্মকর্তারা জানান, গ্যাস টারবাইনে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যু ৎপাদনে যে ব্যয়, সেই একই ব্যয়ে স্টিম টারবাইন ইউনিটে বাড়তি ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যু ৎপাদন সম্ভব হতো। বর্তমানে গ্যাস টারবাইনের মাধ্যমে প্রতি ইউনিট বিদ্যু ৎপাদনে ফুয়েল খরচ প্রায় .২৫ পয়সা। দীর্ঘসময় বিদ্যু ৎপাদন বন্ধ থাকায় এনিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে, তবে চলতি বছরের শেষ দিকে স্টিম টারবাইন ইউনিটটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কর্মকর্তারা আরও জানান, বিদ্যু কেন্দ্রের গ্যাস টারবাইন ইউনিটের যন্ত্রাংশ কেনা মেরামতের কাজে ব্যয় হয়েছে প্রায় লাখ ২১ হাজার ডলার। এছাড়া স্টিম টারবাইনের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১৫ কোটি টাকা।

চাঁদপুর ১৫০ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যু ৎপাদন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী অভিজি কুরি বলেন, এই মুহুর্তে কেন্দ্রের একটি টারবাইন ইউনিট কার্যকর আছে। স্টিম টারবাইন ওভার রোলিং এখন বন্ধ। এটির জন্য চায়নার একটি বিশেষজ্ঞ কোম্পানীর সাথে আমরা চুক্তিবদ্ধ আছি। তারা এসে এটি মেরামতের জন্য খুব শিগগিরই কাজ শুরু করবে।

চাঁদপুর শহরের নিউ ট্রাক রোডের গুনরাজদি পাওয়ার হাউজ এলাকায় হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করে চীনা কোম্পানী চেংদা ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ২০১২ সালের মার্চ মাস থেকে বিদ্যু ৎপাদন শুরু করে বিদ্যু কেন্দ্রটি।

×