বাউফলে ডাল ক্ষেতে বিষ প্রয়োগ করায় মারা যাচ্ছে কবুতরসহ বন্যপাখি।
নাজিরপুর ইউনিয়নের বড়ডালিমা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শৌখিন কবুতর পালক স্থানীয় ১৪-১৫জন তরুন।
ওই এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বড়হাওলাদার বাড়ির কৃষক আলাল হাওলাদার তার খেসারি ডাল ক্ষেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব কবুতর ও পাখির মৃত্যু হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
ভূক্তভোগী ওই বড়ডালিমা গ্রামের মো. জাকির হোসেনের ছেলে মো. সাঈম জানান, আমি সখেরবশে পড়াশুনার পাশাপাশি কবুতর পালন করি। শনিবার দুপুরের আগে বাহির থেকে কোনমতে উড়ে এসে ঘরে চালায় বসার পরপরই আমার তিন জোড়া কবুতর মারা যায়। আজ মঙ্গলবার সকালেও এলাকার জিসান নামে একজনের কবুতর মারা যাওয়ার কথা জানতে পেরেছি। ওই ক্ষেতে কবুতর, ঘুঘু, চড়–ই কিংবা অন্যকোন বন্যপাখিরা বসলে মারা পড়ছে।
তিনি আরো জানান, চাষ ছাড়াই একটি ক্ষেতে ঘাসের ভেতর খেসারি ডালের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ছিটিয়ে দেয় আলাল হাওলাদার। খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, পুরোটা এলাকা আমন ধানে ছেয়ে থাকলেও একমাত্র আলাল হাওলাদারই তার ক্ষেতে সেখারি ডাল বুনেছেন। তার ক্ষেত থেকে কবুতর উড়ে এসে ঘরের চালায় বসার পরপরই মৃত্যু হয়।
একই এলাকার জাহাঙ্গির মৃধার ছেলে একটি মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী মো. আব্দুল্লাহ জিসান জানায়, আজ সকালে আমার একটি কবুতর ও একজোড়া বাচ্চা মারা গেছে। এর আগে রোববার মারা যায় অনেক দামি একজোড়া রেসারসহ ১৭টি কবুতর। আলাল হাওলাদারের ক্ষেতের সেখারি ডাল খেয়েই কবুতরগুলো মারা গেছে। এলাকায় একমাত্র ওনার (আলাল হাওলাদার) ক্ষেতেই ডাল বোনা রয়েছে। অনেকের ঘরে আবার মারা যাওয়া কবুতরের ডিম ও ছোট ছোট বাচ্চা পড়ে আছে। উড়ে এসে ডিমে তা দিতে বসেও মড়ছে কারো কারো কবুতর। ফিডিং করতে না পাড়ায় যেমন চোখের সামনে করুনভাবে বাচ্চাগুলো মরছে তেমনি আবার তা দিতে না পাড়ায় অকেজো হয়ে পড়েছে ডিমগুলো। অসুস্থাবস্থায় আছে অনেকের কবুতর। আমরা ১০-১২ জন স্থানীয় মস্তফা মেম্বরকে (সাবেক মেম্বর) বিষয়টি জানালে তার মাধ্যমে আলাল হাওলাদার সমাধানের জন্য কিছুটা ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিলেও সময়ের সঙ্গে এড়িয়ে যাচ্ছেন তিনি।
তিনি আরো জানান, এলাকার খালেক মাওলানার ১৩টি, মিরাজের ৮টি, জিসানের ১৭ টি কবুতরসহ খোকন জোমাদ্দার, কাইয়ুম, মিরাজ নামে ১৪-১৫ জনের কবুতর মারা গেছে। গত শনিবার থেকে মারা পড়ছে কবুতর ও বন্যপাখি। অনেকের কবুতর ফিরছে না ঘরে। কারো বাড়িতে আবার ধুকতে ধুকতে মড়ছে।
ভূক্তভোগী কয়েকজনসহ খোঁজ নিয়ে আলাল হাওলাদারের ক্ষেতে, পাশের ধান ক্ষেতে, রাস্তার পাশে, নদীর পাড়ে মারা যাওয়া কবুতর দেখতে পায়। কেউ আবার মারা যাওয়া কবুতরের পেট কেটে খেসারি ডাল দেখে নিশ্চিত হন। ঘটনা সামাল দিতে আলাল হাওলাদার ক্ষেত থেকে মারা যাওয়া কবুতরগুলো লোকচক্ষুর অন্তরালে নদীতে নিয়ে ফেলার কথাও জানা গেছে। তবে ক্ষেতে ডালের সঙ্গে বিষ ছিটিয়ে দেওয়ার কথা আগে জানাতে পাড়লে অথবা লাল নিশান পুতে দিলে আমরা কবুতরগুলো ঘরে আটকে রাখতে পারতাম বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে আলাল হাওলাদার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, অনেক দিন আগে থেকে কবুতর মারা যাচ্ছে। আমি ক্ষেতে বিষ দেইনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা বনকর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান সোহাগ জানান, কয়েকজনের কবুতর ও বন্যপাখি মারা যাওয়ার খবর পেয়েছি। ভালভাবে খোঁজ খবর নিয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে আইনাগত ব্যাবস্থা নেয়ার জন্য অবহিত করা হবে।
রাজু