ছবি: সংগৃহীত।
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে আওয়ামী লীগের সাবেক এক সংসদ সদস্যের (এমপি) ছেলে রেজাউন-উল হক তরঙ্গ (২৭) কে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনা ঘটেছে। অপহরণের পর তরঙ্গের মায়ের কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়, তবে পরে তাকে নিরাপদে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনা ঘটেছে সোমবার রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে। তরঙ্গের বাবা রায়হানুল হক সম্প্রতি গ্রেফতার হয়ে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। সোমবার আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
তরঙ্গের মা নার্গিস খাতুন, যিনি চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র, অভিযোগ করেছেন যে রাজশাহী শহরের কিছু ছাত্রদল নেতা তার ছেলেকে কারাগারের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায়।
সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কারাগারের সামনে নার্গিস খাতুনকে স্থানীয় যুবদল নেতা মোমিনসহ কয়েকজন সমবেদনা জানাচ্ছিলেন এবং তাঁরা তাকে আশ্বস্ত করেন যে অপহরণকারীরা তরঙ্গকে ছেড়ে দেবে। কিছু সময় পর রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পৌঁছান, এবং নার্গিস ও তাকে ঘটনাটি বিস্তারিত জানান।
নার্গিস খাতুন জানান, তার স্বামী অসুস্থ থাকায় তিনি আদালতে জামিনের জন্য উপস্থিত ছিলেন এবং সন্ধ্যায় কারাগারের সামনে আসেন। তিনি ও তার আত্মীয় আবেশ পাশের মোড়ে গিয়ে বসে ছিলেন, কিন্তু তরঙ্গ ও তাদের আইনজীবী কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী আইনজীবীকে মারধর করে তরঙ্গকে অপহরণ করে। তরঙ্গ তখন মায়ের কাছে ফোন করেন এবং জানান যে তাকে পদ্মা নদীর ধারে নিয়ে গিয়ে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে।
ঘটনার কিছুক্ষণ পর ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা তাদের এক আত্মীয়ের সহায়তায় তরঙ্গকে উদ্ধার করতে সহায়তা করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তরঙ্গকে লালন শাহ মুক্তমঞ্চ এলাকায় তার এক মামাতো ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মামাতো ভাই তাকে নগরীর সিপাইপাড়া এলাকায় তাদের বাড়ি নিয়ে যান।
নার্গিস খাতুন জানান, অপহরণের পর তার ছেলেকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়নি এবং মুক্তিপণও পরিশোধ করা লাগেনি, কারণ ছাত্রদল ও যুবদলের নেতাকর্মীরা তার ছেলেকে উদ্ধার করতে সাহায্য করেছেন।
এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করার পরিকল্পনা সম্পর্কে নার্গিস বলেন, "অভিযোগ আর কাকে দেব? কাউকে অভিযোগ দেব না। আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে দিলাম।"
মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাকসুদুর রহমানের সঙ্গে অভিযোগ সম্পর্কে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, "তরঙ্গ ছাত্রলীগ করত। সে কারণে কিছু স্থানীয় ছেলে তাকে আটকেছিল, পুলিশে তুলে দেয়ার জন্য। আমরা তার মুক্তির ব্যবস্থা করেছি।"
নুসরাত