নাজিমুল ইসলাম খান। পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গনিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক।
লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলাধীন পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় উক্ত উপজেলার একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন ধরে অত্র প্রতিষ্ঠানটি তাদের সেই সুনাম ধরে রেখেছে।
কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত, এবার সেই পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের সুনামের উপর নেমে আসলো কালো ছায়া। না, অন্য কোন কারণে নয়, এই কালো ছায়া অত্র প্রতিষ্ঠানেরই গনিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক নাজিমুল ইসলাম খান ওরফে (খান স্যার) ।
ক্ষোভে ফেটে পড়েসে পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। কারণ, নাজিমুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করা কিংবা শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ শুধু একজন বা দুজন শিক্ষার্থীর নয় এমন অনেক কোমলমতি শিক্ষার্থীর।
দৈনিক জনকণ্ঠ সরেজমিনে গিয়ে জানতে পারে, দীর্ঘদিন ধরে অত্র প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ছাত্রীর সঙ্গে সেই প্রতিষ্ঠানেরই ল্যাব রুমে কখনো বা প্রাইভেট কক্ষে কখনো বা অশ্লীল বাক্যের মাধ্যমে কোমলমতি ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া বালিকাদের উত্যক্ত করেছে নাজমুল ইসলাম খান।
এমনকি জানা যায়, তিনি কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের বাড়িতে গিয়ে অভিভাবকদের আড়ালে ছাত্রীদের শরীরে বিভিন্নভাবে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা দাবি করেন যে, ওই শিক্ষক তাদের কোমলমতি বাচ্চাদের এমনভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে উত্যক্ত করতেন যে অশ্লীলতার শিকার হওয়া সেই শিক্ষার্থীরা তাদের মা- বাবাকেও ভয়ে বিষয়টি খুব সহজে জানাতে পারেনি। সকল অভিভাবক দাবি জানান, উক্ত শিক্ষককে তার এমন জঘন্যতম কাজের জন্য অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে বদলি না করে তাকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে, যেন আর কেউ এধরণের অপকর্ম করার সাহস না পায়।
আরও জানা যায়, ঘটনা ফাঁস হওয়ার আশঙ্কা আগেই বুঝতে পেরে নাজিমুল ইসলাম খান বিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে নেন।
তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "আমি পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৫ বছর ধরে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করছি। এখন পর্যন্ত এরকম কোন কাজ আমার দ্বারা সংঘটিত হয়নি। যারা আমার নামে এরকম মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে তাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে কোন প্রমানই নেই"।
তাকে জনকন্ঠ প্রশ্ন করে এক দুজন নয়, অসংখ্য শিক্ষার্থীর সঙ্গে তো তার কোন ব্যাক্তিগত দ্বন্দ্ব থাকতে পারেনা। উত্তরে তিনি জনকন্ঠকে বলেন, তাকে নিয়ে একটি মহল কুচক্র চালাচ্ছে তার শিক্ষকতা জীবনে কালি মেখে দেওয়ার জন্য।
এ ব্যাপারে পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার পর জনকণ্ঠকে জানান, "আমি অভিযোগের প্রেক্ষিতে উর্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করবো এবং অতি দ্রুত তাদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সঠিক এবং নিয়মানুগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।" তিনি আরও বলেন, ছাত্রীরা আমাকে অশ্লীলতার বিষয়ে কোন কিছু সম্পূর্ণরুপে প্রকাশ করেনি।
উক্ত অশ্লীলতা এবং উত্যক্ততার বিষয় নিয়ে পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিচার দাবির উদ্দেশ্যে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের উপজেলা নির্বাহি অফিসারের কাছে গেলে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের নির্বাহি অফিসার রুহুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের কাছে সকল ঘটনা শুনে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি তদন্ত কমিটি গঠন করবেন এবং ঘটনার আসল সত্যতা যাচাই করে অতি দ্রুতই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে শিক্ষার্থী ও অবিভাবদের আশ্বাস প্রদান করেন।
হৃদয়