ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

প্রি-পেইড মিটার নিয়ে অসন্তোষ, ডেমরায় বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও

নিজস্ব সংবাদদাতা, ডেমরা, ঢাকা

প্রকাশিত: ১৮:৪৩, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

প্রি-পেইড মিটার নিয়ে অসন্তোষ, ডেমরায় বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও

রাজধানীর ডেমরায় ডিজিটাল প্রি-পেইড মিটার পরিবর্তনের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা ডেমরা-শিমরাইল সড়কের পাশে অবস্থিত ডেমরা ডিপিডিসি (ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। প্রায় এক ঘণ্টা সড়ক অবরোধের পর ডেমরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বিক্ষোভকারীরা ডিপিডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুজ্জামানের কার্যালয়ে গিয়ে তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন। তারা অভিযোগ করেন, প্রি-পেইড মিটারের ব্যবহারে অসঙ্গতিপূর্ণ বিল, অতিরিক্ত চার্জ, মিটার চার্জসহ নানা অনিয়মের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এ অবস্থায় তারা প্রি-পেইড মিটার বাতিল করে পুরনো পোস্ট-পেইড মিটার পুনঃস্থাপন, আর্থিক ক্ষতির প্রতিকার এবং বিদ্যুৎ খাতে অনিয়ম দূর করার দাবি জানান। এলাকাবাসীর এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ডিপিডিসি কর্তৃপক্ষ সমস্যাগুলো সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকারের আমলে কৌশল করে নিম্নমানের প্রি-পেইড মিটার আমদানি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের মাধ্যমে গ্রাহকদের বাড়ি থেকে পুরনো এনালগ মিটার অপসারণ করে টাকার বিনিময়ে নতুন প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করেছে। এর ফলে সাধারণ জনগণকে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের চাপ সহ্য করতে হচ্ছে। তারা আরও বলেন, প্রি-পেইড মিটারের মাধ্যমে ভৌতিক বিল আসছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিভাগ বিপুল অর্থ আত্মসাত করছে। তারা এই অনিয়মের অবসান দাবি করে বিদ্যুৎ খাতে স্বচ্ছতা এবং পুরনো এনালগ মিটার পুনর্বহালের আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে ডেমরা ডিপিডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসানুজ্জামান জানান, সরকারিভাবে নিয়ম মেনে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে মিটার স্থাপনের পরপরই তিন থেকে পাঁচ মাসের বিদ্যুৎ বিল একত্রে গ্রাহকদের প্রদান করায়। এতে মোট বিলের সঙ্গে ৫ শতাংশ ভ্যাট, প্রতি মিটারের জন্য ৪০ টাকা মাসিক রেন্ট এবং ডিমান্ড চার্জ যোগ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুতের নির্ধারিত কিলোওয়াট প্রতি মূল্য ৩৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪২ টাকা হয়েছে। ফলে একসঙ্গে কয়েক মাসের বিলের চাপ এবং নতুন মিটারের অন্যান্য চার্জের কারণে গ্রাহকদের কাছে প্রি-পেইড মিটারের বিল তুলনামূলক বেশি মনে হচ্ছে। তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্ত করে বলেন, অন্তত দশটি প্রি-পেইড মিটারের সঙ্গে পুরনো অ্যানালগ মিটার স্থাপন করে বিদ্যুৎ বিলের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করা হবে। এর মাধ্যমে গাণিতিকভাবে প্রি-পেইড মিটারের বিল সংক্রান্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। পরবর্তীতে দুই ধরনের মিটারের পরিসংখ্যান উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডেমরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাজমুল হোসাইন জানান, প্রি-পেইড মিটার পরিবর্তনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করা হলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ ও থানা পুলিশ সমন্বয়ের মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে সমস্যার সমাধান করা হবে।

 

×