১১ বছর আগেও তালগাছটির সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাইনবোর্ড লাগানো ছিল। যেখানে লেখা ছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত সরকারী সম্পত্তি। মৌজার নাম লতাচাপলী। জে এল নং ৩৪। খতিয়ান নং এক ও ১২২৭। দাগ নম্বর ৫১৭৮। জমির পরিমাণ ১২ একর ৯৬ শতক। এখন সাইনবোর্ড নেই।
বহু আগেই উধাও হয়ে গেছে। জমির চারদিকসহ ভিতরে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। কুয়াকাটার প্রাণকেন্দ্রে শূন্য পয়েন্টের পশ্চিম দিকে বেড়িবাঁধের ভিতরে এ জমির অবস্থান। এক শতক জমির দাম কমপক্ষে দশ লাখ টাকা। সেখানে প্রায় ১৩ একর জমির মালিকানার সাইনবোর্ড উধাও হয়ে গেল। প্রায় যুগ পেরিয়ে গেছে, কারও কোন মাথাব্যথা নেই। একই দৃশ্য কুয়াকাটা শূন্যপয়েন্টের পুবদিকের অবস্থা। মূল খতিয়ান ৬৬২ থাকলেও ১২০৩ নম্বর একটি ভুয়া খতিয়ান খুলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় দুই একর জমি দিঘিসহ ভরাট করে দখল করে নিয়েছে।
একই দৃশ্য খাজুরা এলাকায় বেড়িবাঁধের পাম্পসহ মাইলের পর মাইল এলাকা কাটাতারের বেড়া দিয়ে দখল করা হয়েছে। মহিপুরে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে প্রায় ছয় একর জমি। ফাঁসিপাড়া স্লুইস সংলগ্ন আশপাশের প্রায় তিন একর জমি জবরদখল করে সেখানে স্থাপনা তুলেছে কয়েকটি মহল। একটি হাউজিং কোম্পানি দখল করেছে পাউবোর প্রায় ৭৫ শতক জমি। এভাবে কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার সম্পতি দেদার দখল করা হয়েছে। এমনকি বন্যানিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের স্লেঅপসহ অধিগ্রহন করা জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে হোটেল। এসব জমির সরকারি খাজনা পর্যন্ত ফি-বছর পাউবো পরিশোধ করে আসছে। অথচ সরকারের এ সম্পত্তি রক্ষায় কার্যকর কোন ভূমিকা নেই। খোদ কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসের পেছনে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ২৯টি স্থাপনা।
২০১৮ সালের ৩১ মে এসব স্থাপনার তালিকা করে উচ্ছেদে উদ্যোগ নেয়া হলেও তা আবার থেমে যায়। খেপুপাড়া মৌজার এস এ ২৭৮ নম্বর খতিয়ানের ৬০৬, ৬০৯ ও ৬১১ নম্বর দাগে এ জমির অবস্থান। কলোনীর এসব নাল জমিতে এখন স্থাপনায় সয়লাব। এসব বিভিন্ন কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার সম্পত্তি স্থায়ীভাবে বেহাত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে বহু জায়গায় বহুতল স্থাপনা তোলা হয়েছে।
অভিজ্ঞ মহলের অভিমত এই মুহুর্তে পরিকল্পিতভাবে পর্যটন এলাকার উন্নয়নে এসব জমি উদ্ধার করা প্রয়োজন। পানি উন্নয়ন বোর্ড কলাপাড়ার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. শাহআলম ভুইয়া জানান, কুয়াকাটায় ইতোমধ্যে কিছু জমি উদ্ধার করা হয়েছে। উপরোক্ত বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। এছাড়া পাউবোর কলোনীর উত্তর পাশের জমি উদ্ধারের প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি রয়েছে।
রিয়াদ