শীতকাল মানেই মা-দাদীদের হাতের ছোয়ায় বাহারী রকমের নকশায় আঁকা সুস্বাদু সব পিঠার আয়োজন। চুলার পাশে বসে ধোঁয়া ওঠা গরম ভাপা, চিতই, পাটি শাপটা আর পাকান পিঠার ঘ্রাণ। মজাদার সে সব খাবার গুলো আধুনিকতার ছোয়ায় হারিয়ে গেলেও পিঠা উৎসবে তা ফিরে এসেছে।
শুক্রবার বিকেলে গোপালগঞ্জ মুকসুদপুর উপজেলার কমলাপুর আব্দুল খালেক একাডেমি প্রাঙ্গনে, দুই দিন ব্যাপী নবান্ন ছোয়া পিঠা উৎসবের আয়োজন করে জাগ্রত যুব সমাজ সংগঠন। পরদিন শনিবার রাত ১০টার সময় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণীর মধ্য দিয়ে মেলা শেষ হয়। গ্রামীণ এ উৎসবে আগত পিঠা প্রেমিদের ছিলো উপচেপড়া ভিড়। ছোট বড় প্রায় সব বয়সি মানুষের উপস্থিতি মেলাকে জমিয়ে তোলে।
অনান্য বছরের মত এবারো বেশ কয়েকটি স্টলে নানা রকমের সব লোভনীয় দেশীয় পিঠা এসেছে এ মেলায়। বিভিন্ন নামে কয়েকটি ২০ টি স্টল সাজিয়ে বসেছেন দোকনিরা। বেচা বিক্রির চেয়ে আনন্দ ভাগাভাগি যেন ঠাই পেয়েছে সকলের মধ্যে । দুদিনের এই মেলায় অংশগ্রহণকারীরা প্রায় ১০ লাখ টাকার পিঠা বিক্রি করেছে বলে জানিয়েছে আয়োজক কমিটি।
এরমধ্যে আব্দুল খালেক একাডেমি পিঠা ঘরের রকমারি চিতই পিঠা ও হাসের মাংসের দোকান নিয়ে বসেছে একটি স্টল। পিঠাঘরে দায়িত্বরতদের প্রায় সবাই রঙ্গীণ সাজে নানা কথায় আকৃষ্ট করবার চেষ্টা করছে পিঠা প্রেমিদের।
এদিকে, বাহারী সব সাজে বন্ধু মহল পিঠা ঘরের নিয়ে এসেছে, দেশীয় মান ও স্বাদের সব পিঠা। সাশ্রয়ী মূল্যে পিঠা পাওয়া যাচ্ছে এমন দাবি করে দোকানী বলেন, আমাদের সব পিঠাগুলো খুবই কম মূল্যে পাচ্ছেন পিঠা প্রেমিরা। পিঠা বিলাশ স্টলের পরিচালাক রাজীব ফকির বললেন, স্বুস্বাদু সব দেশীয় আইটেম রয়েছে তাদের। এছাড়া, দাদা নাতী পিঠা ঘরে নুশরাত জাহান ঐশী এনেছে পাকান চিতই নারিকেল নাড়ু ভাপাসহ হরেক রকমের পিঠা। বিক্রির চেয়ে আনন্দ বেশি বলে জানায় ছোট্ট এ সোনামণী। দাদির হাতের ছোয়ার পিঠা যে একবার খাবে তার স্বাদ কখনো ভূলতে পারবে না বলে জানায় সে।
এদিকে, আগতরা বেশ আগ্রহের সঙ্গে উপভোগ করছেন পিঠা মেলা। বিক্রির চেয়ে আনন্দটাই বেশ জমে উঠেছে বলে দাবি সকলের। আগতদের মধ্যে ছোট বড় সকলেই আনন্দের সাথে পিঠা ক্রয় করে খেয়েছেন এবং বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
মেলার আয়োজকের মধ্যে একজন মেহের মামুন, সুমন ফকির, সাবিত আহম্মেদ সোহান জানায়, মেলা আয়োজনে খুব ভালো লাগছে তাদের। এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হবে। এবছর ২০টি ষ্টল অংশগ্রহণ করেছে। আগামীতে আরও বেশি অংশগ্রহণ করবে বলে তারা আশাবাদী। এছাড়া ৪টি ষ্টলকে সেরার পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে। গ্রামীণ জনপদের এমন পিঠা মেলা প্রত্যেক বছর হোক দাবি পিঠা প্রেমীদের।