ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

জয়পুরহাটে উচ্চ ফলনশীল আলুবীজের সংকট 

নিজস্ব সংবাদদাতা, জয়পুরহাট

প্রকাশিত: ০০:০১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

জয়পুরহাটে উচ্চ ফলনশীল আলুবীজের সংকট 

জয়পুরহাটে উচ্চ ফলনশীল আলুবীজের সংকট

জয়পুরহাটে উচ্চ ফলনশীল আলুবীজের সংকটের কারণে ৮০ টাকার বীজ ১০০ টাকা কেজিতেও মিলছে না। ফলে কৃষকরা পড়েছেন বিপাকে। নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত টাকায়ও চাহিদামত বীজ সংগ্রহ করতে পারছেন না কৃষকরা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার বীজ ডিলার ও খুচরা বীজ ব্যবসায়ীদের নিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় মতবিনিময় সভা করে আলুবীজের দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। কৃষি বিভাগের দাবি, সংকট নয় অসাধু বীজ ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণেই কিছু কৃষক আলুবীজের দাম বেশি নেওয়ার অভিযোগ তুলছেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুরো জেলায় প্রশাসনের পাশাপাশি কৃষি বিভাগের একাধিক টিম বাজার মনিটরিং করছে। 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জেলায় এবার ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের জন্য ৬০ হাজার টন আলুবীজের প্রয়োজন। উচ্চ ফলনশীল বীজের চাহিদার কারণে এরই মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) থেকে চার হাজার টন আলুবীজ জেলার ২১০ জন ডিলারের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। একইভাবে বেসরকারি কোম্পানি ব্র্যাক, এসিআই ও সুপ্রিমসহ অন্যান্য কোম্পানির আলুবীজও বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ৬ হাজার ৪৫০ টন বিভিন্ন জাতের উচ্চ ফলনশীল আলুবীজ ১৪ জন ডিলার ও ৩২০ জন সাব-ডিলারের মাধ্যমে তালিকা করে কোম্পানি নির্ধারিত দামে প্রকৃত কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য কোম্পাানসহ চাহিদার ৩৫ শতাংশ উচ্চ ফলনশীল আলুবীজ জেলায় সরবরাহ হয়েছে। আর বাকি ৬৫ শতাংশ বীজ আলুর চাহিদা মিটিয়েছে সচেতন কৃষক ও স্থানীয় কৃষক উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে। ফলে বাজারে আলুবীজের কোন সংকট নেই দাবি কৃষি বিভাগের। 
তবে ভুক্তভোগী কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, এ বছর সরকারি-বেসরকারি প্রতি কেজি ‘এ’ ও ‘বি’ গ্রেডের উচ্চ ফলনশীল আলুবীজ প্রকারভেদে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৮-৮০ টাকা। কিন্তু বাজারে কিনতে গেলে ওই দামে সহসা বীজ মিলছে না।  আবার ১০০ টাকা কেজিতে ওই বীজই মিলছে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে। আবার চাহিদার কারণে ট্রাকে করে গ্রামে নিয়েও অসাধু ব্যবসায়ীরা গোপনে বেশি দামে আলুবীজ বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ক্ষেতলাল উপজেলার বস্তা গ্রামের প্রান্তিক কৃষক সুরুজ মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে রোপণের জন্য তার চার বস্তা আলুবীজের প্রয়োজন। কিন্তু বাজারে কোনো বীজ পাওয়া যাচ্ছে না। ৩ হাজার ২০০ টাকার আলুবীজ এখন বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২০০ টাকায়। তাও পাওয়া যাচ্ছে না।  ক্ষেতলালের এক ইউপি সদস্যর অভিযোগ, কৃষকের বেশি চাহিদা ব্র্যাক কোম্পানির আলুবীজের। সেই সুযোগ নিয়ে তারা বীজের সঙ্গে বিভিন্ন প্যাকেটজাত বোরন, দস্তাসহ অন্যান্য প্যাকেটজাত জৈব সারও কৃষকদের কিনতে বাধ্য করছেন। শিবপুর বাজারের খুচরা বীজ ব্যবসায়ী ছানোয়ার হোসেন বলেন, ডিলারদের কারসাজির কারণেই কৃষকরা বেশি দামে আলুবীজ কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।

×