ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বস্তায় আদা চাষে বাজিমাত স্কুল শিক্ষকের

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া:

প্রকাশিত: ১৩:২২, ২৩ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৩:২৯, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

বস্তায় আদা চাষে বাজিমাত স্কুল শিক্ষকের

জমিতে চাষাবাদের চেয়ে বস্তায় আদার ফলন অনেক বেশি হয়।

মাটিতে আদা চাষ করলে মাটির আর্দ্রতা রক্ষা করা যায় না। এতে ঘাস বেশি জন্মায়, মাটি শক্ত হয়ে যায়। ফলে আদার বিস্তারে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফলন কমে যায়। আর বর্ষাকালে মাটিতে পানি জমে আদা পচে যায়। কিন্তু বস্তা পদ্ধতিতে আদা চাষ করলে এ ধরনের কোনো ঝুঁকি থাকে না। বস্তায় মাটি নরম থাকে, ঘাস কম হয়। অন্যদিকে বস্তায় ছিদ্র থাকায় বর্ষাকালে পানি জমে না। ফলে জমিতে চাষাবাদের চেয়ে বস্তায় আদার ফলন অনেক বেশি হয়।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের রূপসদী দক্ষিণপাড়া গ্রামের পেশায় শিক্ষক ও কৃষির প্রতি অন্তপ্রাণ মোঃ সাইদুজ্জামান ১০ শতক জমিতে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছরই প্রথম নতুন পদ্ধতিতে বাণিজ্যিকভাবে প্রায় ৮শত বস্তায় আদা চাষ করেছে। জমির চেয়ে বস্তায় আদাগাছ অনেক ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ায় তার বস্তায় আদা চাষের পদ্ধতি ও ফলন দেখতে বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছুটে আসছে আগ্রহী কৃষক। 

জানা গেছে, অল্প পুজিতে এবার শুধু আদা চাষেই কয়েক লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন কৃষক মোঃ সাইদুজ্জামান। পাশাপাশি করলা, শসা, ঝিঙা সবজিতে আরো লাখ টাকা লাভ হতে পারে। 

কৃষক মোঃ সাইদুজ্জামান জনকন্ঠেকে জানান, ‘বাণিজ্যিকভাবে আদা চাষ করার ইচ্ছে আগে থেকেই ছিল। কিভাবে আদা চাষ করলে লাভবান হওয়া যাবে, আগে সেটা পরিকল্পনা করি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে কথা বলি। এ কাজে প্রথমে বিভিন্ন এলাকা থেকে সিমেন্টের খালি বস্তা সংগ্রহ করি। জৈব ও রাসায়নিক সার দিয়ে প্রায় দুই সপ্তাহে মাটি প্রস্তুত করি। পরে প্রতি বস্তায় আদার তিনটি করে বীজ রোপণ করি। সবমিলিয়ে প্রতি বস্তায় খরচ পড়বে ৩২ টাকা। আর প্রতি বস্তা থেকে এক-দুই কেজি করে আদা পাব বলে আশা করি। এক সঙ্গে একাধিক ফসল ফলাতে পারলে স্বল্প সময় ও অল্প খরচে বেশি লাভবান হওয়া যাবে। 

কৃষক মোঃ সাইদুজ্জামান আরও বলেন, আমি খন্ডকালিন একজন স্কুল শিক্ষক যদি কৃষি অফিস থেকে কোন প্রণোদনা পাই আগামী মৌসুমে এবারের চেয়ে সমন্বিত পদ্ধতিতে বেশি জমি লিজ নিয়ে একাধিক ফসলের আবাদ শুরু করব।

‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাসির উদ্দিন জনকন্ঠেকে বলেন, ‘বস্তায় আদা চাষ করলে বাড়তি ফসলি জমি ও শ্রমের প্রয়োজন হয় না। বস্তার মাটি নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। মাটির সঙ্গে গোবর সার, খৈল, ছাইসহ রাসায়নিক সার মিশিয়ে কৃষকেরা পতিত জমি কাজে লাগিয়ে বস্তায় আদা চাষ করছেন। সার-গোবর ছাড়া একটু খেয়াল ও মাঝে মাঝে পানি দিলেই আদা গাছ টিকে যাবে। কৃষকদের নতুন এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির আশপাশের ছায়াযুক্ত জায়গা, বাগান, পতিত স্থানে সহজেই এ পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়।মোঃ সাইদুজ্জামান এর মত অন্য কৃষকদের মধ্যে বস্তায় আদা চাষ সম্প্রসারিত হলে এলাকায় মসলা উৎপাদন আরও সমৃদ্ধ হবে।,’
 

আর কে

×