গাইবান্ধায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের আয়োজিত "জনতার বাজারে" কম দামে গরুর মাংসও বিক্রি করছেন ছাত্ররা। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল ৮টার দিকে সবজির পাশাপাশি আজই প্রথম এই গরুর মাংস বিক্রি শুরু করেন তারা। প্রতি কেজি মাংসের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২০ টাকা। যা স্থানীয় বাজারে তুলনায় কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কম।
গাইবান্ধা শহরের জিরো পয়েন্টে (পুরাতন জেলখানা মোড়) ছাত্রদের এই কম মূল্যের জনতার বাজার। যেখানে জেলার গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা-সাঘাটা, গাইবান্ধা-বালাসি ও গাইবান্ধা-পলাশবাড়ী সড়ক এসে মিলিত হয়েছে।সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরের পুরাতন জেলখানা মোড়ে ছাত্রদের "জনতার বাজারে" গিয়ে দেখা যায়, সবজির দোকানের পাশেই বসানো হয়েছে মাংসের দোকান। সেখানে মাংস ক্রয়ের টোকেন হাতে সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস নিতে অপেক্ষা করছেন ক্রেতারা। বিশৃঙখলা এড়াতে আগেই মাংসের দাম নিয়ে টোকেন হাতে ক্রেতাদের লাইনে দাঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা। এসময় লাইন ছাড়াও মাংস কিনতে আসা ক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে।
এসময় কম দামে মাংস কিনতে আসা এক চাকরিজীবী রেজাউল আলম বলেন, এখানে বাজারের থেকে ৬০ টাকা কমে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। কম দামে পাওয়ায় এক কেজি মাংস কেনার জন্য টোকেন হাতে দাঁড়িয়েছি।এসময় গাইবান্ধার ছাত্র প্রতিনিধি আবুজর গিফারি রাফি বলেন, গাইবান্ধার জনতার বাজারে আজই প্রথম সবজির পাশাপাশি গরুর মাংস বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতি কেজি মাংসের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে টাকা ৬২০। স্থানীয় বাজারের থেকে যা কেজিতে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত কম। একজন ক্রেতাকে ২৫০ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ দুই কেজি পর্যন্ত মাংস দেওয়া হচ্ছে।
বিনা লাভে ছাত্রদের গরু ক্রয়য়ের সিংহভাগ টাকা দেওয়া ব্যবসায়ী যুবক মাহফুজ বলেন, "ছাত্র জনতার সবজির বাজারকে সমর্থন জানিয়ে কোনো মুনাফা ছাড়া গরু ক্রয়ে ৭০ হাজার টাকা দিয়েছি। এখানে ২৫০ গ্রাম মাংসও বিক্রি করা হচ্ছে। এতে নিম্নবিত্ত মানুষরাও কম দামেই মাংস কিনতে পারবে। মূলত এই কারণেই আমি ডোনেট করেছি। জনতার বাজারে স্থানীয় বাজার থেকে ১০ টাকা কমে কুমড়া ৪০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, ৫ থেকে ৮ টাকা কমে বাঁধাকপি ৪০ টাকা, ১৫ থেকে ২৫ টাকা কমে করলা ৪৫ টাকা, ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে মুলা ৩০ টাকা এবং ১৫ থেকে ৩০ টাকা কমে পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ মোবাইল ফোনে বলেন, ছাত্ররা ন্যায্য মূল্যে সবজি বিক্রি করবে বলে তাদেরকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। যা দিয়ে তারা জনতার বাজার নামক সবজির বাজার শুরু করেছিলো। আজ সেখানে তারা গরু জবাই করেছে। এই কার্যক্রমে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর সকালে গাইবান্ধায় "জনতার বাজারের" উদ্বোধন করেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ। সেদিন থেকেই সেখানে সবজি বিক্রি করছে ছাত্ররা। স্থানীয় বাজারে সবজির দাম স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন ছাত্র প্রতিনিধিরা।
গাইবান্ধায় ছাত্রদের ’জনতার বাজার’, কম দামে মিলছে গরুর মাংস
শীর্ষ সংবাদ: