বাজারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী।
উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং ক্রেতাদের হাতে ন্যায্য মূল্যে সবজি তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ন্যায্য মূল্যের বাজার কার্যক্রম শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সরাসরি খেত থেকে চাষিদের কাছ থেকে উৎপাদিত সবজিসহ নানা ধরনের পণ্য কিনে এনে বিক্রি করা হচ্ছে এই বাজারে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে জেলা অডিটোরিয়াম চত্বরে এই বাজারের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী। বাজারে সকাল থেকেই উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
খেত থেকে আনা কৃষকের পণ্য, সুলভ মূল্যে জনগণের জন্য এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয়েছে এই ন্যায্য মূল্যের বাজার। পঞ্চগড় সরকারি অডিটোরিয়ামে এই বাজার কার্যক্রম পরিচালনায় সহযোগিতা করছে সম্মিলিত সেচ্ছাসেবি ফোরামের স্বেচ্ছাসেবীরা। তারা অধিকাংশই ছাত্র।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্বেচ্ছাসেবীরা চাষিদের খেত থেকে সবজি কিনে এনে বাজার মূল্য থেকে কমমূল্যে বিক্রি করছে। বাজারে আলুর কেজি ৭৫ টাকা হলেও ন্যায্য মূল্যের বাজারে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একইভাবে প্রতি পিস লাউ ২০ টাকা, সিম ৬০ টাকা, করলা ২০, মরিচ ৬৫, বাঁধা কপি ৪০, লাল শাক ৩০, মুলা ৩৫, ডাটা ১৮, পেঁয়াজ ৮০, বেগুন ২০, পালং শাক ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা জানান, বাজার থেকে অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে নানা ধরনের শাক সবজি বিক্রি হচ্ছে এখানে। সকাল থেকেই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় শুরু হয়। এতে ক্রেতারা খুশি। আরও দোকান এবং পণ্য বাড়ালে তাদের সুবিধা হবে। সেইসঙ্গে সপ্তাহের প্রতিদিনই ন্যায্য মূল্যের বাজার পরিচালনা করার দাবি জানান তারা।
রামের ডাঙ্গা এলাকার আব্দুর রশিদ (৬০) বলেন, বাজারের থেকে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমমূল্যে শাক সবজি কিনতে পারছি। তবে আরও দোকানের প্রয়োজন আছে। আর সপ্তাহের প্রতিদিনই বাজার বসলে ভালো হয়। এই বাজারে আমরা টাটকা শাক সবজি পাচ্ছি।
সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী ফোরামের প্রধান সমন্বয়ক আহসান হাবিব জানান, সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা দোকান পরিচালনা করছে। তারা অধিকাংশই ছাত্র। আমরা সিন্ডিকেট ভাঙতে এবং সাধারণ মানুষ যাতে কম মূল্যে শাক সবজি কিনতে পারে, তাই এই দোকানে কাজ করছি। প্রতিদিন ভোর বেলা কৃষকের সবজি খেত থেকে আমরা সবজি কিনে এনে এখানে বিক্রি করছি। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা অতি মুনাফা করতে পারছেনা। তবে কৃষকও ন্যায্য দাম পাচ্ছে। একইসঙ্গে সাধারণ মানুষও কমদামে শাক সবজি কিনতে পারছে। বাজারে দরীদ্র পরিবারদের জন্য সবজি দান বাক্সও আছে। ক্রেতারা ইচ্ছে করলে দরীদ্রদের জন্য সবজি কিনে দানও করতে পারবেন।
এদিকে, আলুর সিন্ডিকেট ভাঙতে বিভিন্ন কোলেস্টরেল থেকে গতকাল বুধবার ১৪ টন আলু কিনেছে জেলা প্রশাসন। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ওই আলু কম দামে বিক্রির জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী জানান, সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায্য মূল্যে শাক সবজি কিনতে পারে তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চাহিদা, যৌক্তিকতা এবং উদ্যেক্তা পেলে এই বাজার আরো সম্পসারিত করা হবে।
এম হাসান