চালু করা হচ্ছে কৃষি মার্কেট
অবশেষে ১২ মাস কৃষি উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত সবজি চাষিদের স্বপ্ন পূরণ হতে চলছে। তাদের জন্য চালু করা হচ্ছে কৃষি মার্কেট। আগামীকাল এক-দুই দিনের মধ্যে মার্কেটের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হচ্ছে। কলাপাড়ার ইউএনও রবিউল ইসলামের উদ্যোগে উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রেস ক্লাবের পশ্চিম দিকেই চালু হচ্ছে এই মার্কেট। এখানে কৃষকরা সরাসরি তাঁদের উৎপাদিত সবজি খোলা বাজারে ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারবেন। কোনো মধ্যস্বত্বভোগী থাকছে না। শুধু তাই নয়, নীলগঞ্জের কুমিরমারাসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষক তাদের সবজি কলাপাড়ায় নেওয়ার জন্য আপাতত দুটি ভ্যান প্রদান করা হচ্ছে।
ভ্যানে নেওয়া সবজির জন্য ব্রিজের কিংবা হাটবাজারের কোনো টোল-খাজনা দিতে হবে না। সাধারণ মানুষকে ন্যায্যমূল্যে শাক-সবজি কেনার সুযোগের পাশাপাশি কৃষকরা সরাসরি হাতে পাবেন বিক্রয়মূল্য। এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন নীলগঞ্জের কুমিরমারা গ্রামের প্রবীণ সবজি চাষি সুলতান গাজী। একই মন্তব্য জাকির গাজীর। তারা জানান, দীর্ঘদিনের দাবি ছিল তাঁদের উৎপাদিত শাকসবজি সহজভাবে বাজারজাত করা সুযোগ। এই সুযোগের কারণে একেকটি ভ্যানে করে প্রতিদিন অন্তত পালা করে চারজন কৃষক বাজারে সরাসরি কৃষিপণ্য বিক্রির সুযোগ পাবেন। কৃষকরা আজ বৃহস্পতিবার ইউএনও রবিউল ইসলামের সঙ্গে তার অফিসে মতবিনিময় সভা করেছেন।
তারা আন্তরিকভাবে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ দেশের প্রকৃত উন্নয়ন ও উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত কৃষকরা উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রিতে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন। এর ফলে এই প্রতিবন্ধকতা দূর হবে। বাজারে কৃষিপণ্যের চড়াদামও কমবে। আবার উৎপাদক কৃষক সরাসরি দাম নিজের হাতে পাবেন।
কৃষক জাকির গাজী জানান, পাখিমারা থেকে প্রতিদিন এক ভ্যান শাকসবজি কলাপাড়া বাজারে নিয়ে বিক্রি করে বর্তমানে অন্তত ব্রিজের টোল, বাজারের খাঁজনা নিয়ে কমপক্ষে ২০০-৩০০ টাকা বাড়তি গুনতে হচ্ছে। এটি আর লাগবে না। জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের এমন ইতিবাচক উদ্যোগের প্রশংসা করছেন কৃষকসহ সাধারণ ক্রেতারা পর্যন্ত। এই বাজারের সার্বিক মনিটরিং করার জন্য উপজেলা প্রশাসন, পৌরসভা কাজ করবে। পাশাপাশি ‘আমরা কলাপাড়াবাসী’ স্বেচ্ছ্বাসেবী সংগঠন সহায়তা করবে। সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, কৃষক এবং সাধারণ ক্রেতাদের দীর্ঘদিনের একটি প্রত্যাশা পূরণ করায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়কে অনেক ধন্যবাদ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম জানান, এই মার্কেট টোল ফ্রি থাকছে। প্রতিদিন পাইকারি-খুচরা ক্রয়-বিক্রিয় চার্ট থাকবে। ক্রেতারা সাশ্রয়ীমূল্যে কেনার সুযোগ পাবেন। আর উৎপাদকরা কোনো ধরনের মধ্যস্বত্বভোগী ছাড়া সরাসরি বাজারদরে বিক্রির সুযোগ পাবেন। আর প্রদানকৃত ভ্যানে সব ধরনের কৃষক তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য পরিবহন করতে পারবেন।