ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নাঙ্গলকোটে ধান ক্ষেতে টুংরো ভাইরাসের আক্রমন কৃষকদের মধ্যে চাপা কান্না

বেলাল হোসেন রিয়াজ, সংবাদদাতা, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ২১ নভেম্বর ২০২৪

নাঙ্গলকোটে  ধান ক্ষেতে টুংরো ভাইরাসের আক্রমন কৃষকদের মধ্যে চাপা কান্না

কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সর্বত্র চলতি আমন মৌসুমে বিভিন্ন জাতের আমন ধান ক্ষেতে ব্যাপকহারে টুংরো ভাইরাসের আক্রমণে আমন ধান ক্ষেত হলুদ বর্ণ ধারণ করে নষ্ট হয়ে গেছে। এক দিকে এবারের বন্যায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি অন্যদিকে ধানের থৌ বের হওয়ার সময় টুংরো ভাইরাসে আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত বসেছে।

নাঙ্গলকোট পৌরসদরসহ ১৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে কয়েকশ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষেত টুংরো ভাইরাসের আক্রমণে হলুদ বর্ণ ধারণ করতে দেখা যায়। কৃষকরা স্থানীয়বাজার থেকে সার ও বিভিন্ন কীটনাশক ক্রয় করে ধান ক্ষেতে প্রয়োগ করে  ও ধান ক্ষেত রক্ষা করতে পারছেন না। প্রত্যেক ইউনিয়নে প্রায় ৩/৪ হেক্টর জমির আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হয়েছে বলে সরেজমিনে এবং কৃষকদের সূত্রে জানা যায়। কৃষকরা ইতোমধ্যে ধানের বীজতলা তৈরী, চারা রোপণ থেকে শুরু করে আগাছা ধমন, সার, কীটনাশক প্রয়োগে হাজার-হাজার টাকা ব্যয় করেছেন। ব্যাপকহারে টুংরো ভাইরাসের কারণে আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কৃষকদের মাঝে চাপা কান্না বিরাজ করতে দেখা য়ায়

কৃষকরা টুংরো ভাইরাসের আক্রমণ হওয়ায় ধান ক্ষেতকে স্থানীয় ভাষায় জন্ডিস রোগ বলছেন। আবার অনেক কৃষকরা এটিকে ধানের গোড়া পচা রোগ বলছেন। কৃষকরা বিভিন্ন ইউনিয়নে দায়িত্বরত উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের কোন প্রকার পরামর্শ না পাওয়ার অভিযোগ করেন। এছাড়া হাতে গণা ২/১জন কৃষক উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নিয়ে ধান ক্ষেতে কীটনাশক প্রয়োগ করলেও কোন উপকার হয়নি বলে কৃষকরা জানান।
নাঙ্গলকোট পৌরসদরসহ ১৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামকে ৩৭ ব্লকে ভাগ করে ২৭ জন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করছেন। তবে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তাদেরকে মাঠ পর্যায়ে দিনরাত কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। তাদের সহযোগিতা নিয়ে তারা ধানচাষ সহ সবজির আবাদ করেন।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কৃষকরা আমন ধানের বীজ তলায় কীটনাশক স্প্রে না করে ধানের চারা রোপণ করায় টুংরো ভাইরাস আক্রমণ করে। এছাড়া জমিতে জলাবদ্ধতায় ঘাস জন্ম হওয়ার কারণে ঘাস থেকে ও সবুজ পাতা ফড়িং পোকার আক্রমণ থেকে টুংরো ভাইরাস আক্রমণ করে। অন্যদিকে সুষম সার প্রয়োগ না করার কারনে ও টুংরো ভাইরাস আক্রমণ করে।
সরেজমিনের নাঙ্গলকোট পৌরসদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাঙ্গলকোট পৌরসদর, পাটোয়ার , বাঙ্গড্ডা, পেড়িয়া, রায়কোট উত্তর, দক্ষিণ, হেসাখাল, মক্রবপুর, আদ্রা উত্তর, দক্ষিণ, জোড্ডা পূর্ব, পশ্চিম, মৌকরা, ঢালুয়া, দৌলখাঁড়, বক্সগঞ্জ, সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের ধান ক্ষেতে ব্যাপকহারে টুংরো ভাইরাসের আক্রমণে আমন ধান ক্ষেত নষ্ট হতে দেখা যায়।

বৃহস্প্রতিবার  নাঙ্গলকোট পৌরসদরের বাতুপাড়া, পাটোয়ার , দৈয়ারা, বাঙ্গড্ডা, পেড়িয়া, মৌকরা, জোড্ডা পূব, পশ্চিম ও আদ্রা দক্ষিন এবং হেসাখাল ইউনিয়ন ঘুরে মাঠের পর মাঠ আমন ধান ক্ষেত কোথায় হলুদ বর্ণ ধারণ করে একবারে নষ্ট হতে দেখা যায়। আবার কোথায়ও ধান ক্ষেত নষ্ট হওয়ার পথে রয়েছে।
এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি স্প্রে করার জন্য যেহেতু ধানের মধ্যে এক ধরনের পোকা জন্ম নেয় । স্প্রে না করলে ঐ পোকা মরে  না । আমাদের উপসহকারী কৃষি অফিসাররা মাঠে কাজ করছে ।  

 

×