১৯৬২ সালে রিকুইজিশন করা পৈতৃক জমি ফেরত, তিন সাঁওতাল হত্যার বিচারের দাবিতে সাঁওতালরা গাইবান্ধা জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। পরে একই দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি), আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ যৌথভাবে এসব কর্মসূচি পালন করে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাসকের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবু, মানবাধিকার কর্মী গোলাম রব্বানী মুসা, অ্যাড. কুশলাশীষ চক্রবর্তী ও অ্যাড. ফারুক কবীর, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু, ব্রিটিশ সরেন, ময়নুল ইসলাম, সাঁওতাল হত্যা মামলার বাদী থমাস হেমব্রম, মনির হোসেন সুইট, হাসান মোর্শেদ দীপন প্রমুখ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর তৎকালীন এমপি আবুল কালাম আজাদ, মহিমাগঞ্জ সুগার মিলের এমডি, জিএম তাদের সন্ত্রাসীরা স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশসহ সাঁওতালদেরকে উচ্ছেদ করতে গেলে দফায় দফায় সংঘর্ষ সাঁওতাদের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে ৩০ জন সাঁওতাল আহত হন। তাঁদের মধ্যে তিন সাঁওতাল মঙ্গল মারডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম মারা যান। অগ্নিসংযোগে পুড়ে যায় সাঁওতালদের ঘরবাড়ি।
পরে জয়পুরপাড়ায় সন্তানদের জন্য একটি বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কতিপয় চিহ্নিত বাঙালি ভূমিদস্যু বিদ্যালয়ের মাঠটি আবারও দখলে নেওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছে। ফলে উত্তেজনার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে সাঁওতাল শিশু শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত ও সুষ্ঠু শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। স্মারকলিপিতে নিরীহ সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর মানুষের নির্বিঘ্ন শান্তিপূর্ণ বসবাসের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম এলাকায় সাঁওতালদের পৈতৃক ১ হাজার ৮৪২.৩০ একর জমি ফেরত, সাঁওতাল পল্লীতে বসতঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, লুটপাট ও তিন সাঁওতাল হত্যায় জড়িত তৎকালীন এমপি আবুল কালাম আজাদ, ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলসহ সকল আসামীর গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান।