চন্দ্রগঞ্জ-চরশাহী সড়কে রহমতখালী খালের ওপর ভেঙে পড়া সেতু
চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন কলেজ সংলগ্ন ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার ফলে শিক্ষার্থীসহ লাখো মানুষের যাতায়াতে ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। রহমতখালী খালের ওপর দিয়ে প্রায় শতফুট দীর্ঘ ব্রিজটি কয়েকটি খ-ে ভেঙে যাওয়া ব্রিজের উপর দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হাজারো নারী, পুরুষ ও স্কুল পড়ুয়া শিশুরা যাতায়াত করছে। প্রবহমান রহমতখালী খালের ওপর প্রতিষ্ঠিত ভেঙে পড়া ব্রিজটি আবারো মুচড়ে পড়ে প্রাণহানিসহ সমূহ দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
জানা গেছে, চন্দ্রগঞ্জ-চরশাহী সড়কে রহমতখালী খালের ওপর ব্রিজটি দিয়ে চরশাহী, কুশাখালী, বসুরহাট, লাহারকান্দিসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৫টি ইউনিয়নের নানান পেশার লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করছে। ব্রিজটির নিচ দিয়ে যাওয়া গ্যাসলাইন বন্ধ হওয়ার ফলে বহু পরিবার রান্নাবান্নার জন্য জ¦ালানি সংকটে পড়েছেন। এ ছাড়া মানুষ এ রুটে নোয়াখালী, ফেনিসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে আসছে। তবে পূর্ব থেকে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ব্রিজটি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। গত রবিবার বিকেলে বিকট শব্দে ভেঙে পড়ার ফলে দৈবক্রমে সেখানে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন বন্ধ হয়ে যাবার ফলে শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ব্যবসায়িক মালামাল ও নিত্যদিনের পারিবারিক জিনিসপত্র নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ব্যাপারটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে জরুরি ভিত্তিতে সেখানে একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও ২০২২ সালে ব্রিজটি নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছি। অপরদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইকরামুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ব্রিজটি বহু পুরনো। আমরা সেখানে ব্রিজ করে দেব। কবে নাগাদ এবং কখন করবেন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে তিনি অপরাগতা প্রকাশ করেন।
নাঙ্গলকোটে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
সংবাদদাতা নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা থেকে জানান, নাঙ্গলকোটের দৌলখাঁড় ও বটতলী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী মাস্টার জয়নাল আবেদীন সেতু এবং সেতু সংলগ্ন সড়কটি সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়ায় দুই ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী সড়কটি দিয়ে প্রতিনিয়ত মালামাল পরিবহনসহ তাদের চলাচল এবং স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করলেও সেতু ও সেতু সংলগ্ন সড়কটি ভেঙে যাওয়ায় তাদেরকে চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দৌলখাঁড় ও বটতলী ইউনিয়নের মাধ্যবর্তী এলজিইডির নাঙ্গলকোট-দৌলখাঁড়-বক্সগঞ্জ প্রধন সড়ক সংলগ্ন মাস্টার জয়নাল আবেদীন সেতু এবং সেতু সংলগ্ন সড়কটি সাম্প্রতিক বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে যায়।
ফলে সেতুটির দুই প্রান্ত সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খালের মধ্যে ঝুঁকে পড়েছে। এছাড়া প্রধান সড়কের মাটি ও সড়ক ভেঙে খালের পানিতেও তলিয়ে গেছে। এতে করে খালের ওপর অবস্থিত সড়কটি প্রধান সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দৌলখাঁড় উত্তর-পশ্চিমপাড়ায় বসবাসরত কয়েক‘শ পরিবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সড়কটির অবশিষ্ট ভাঙ্গা অংশ দিয়ে কোনোভাবে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে পারলেও যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। এতে করে এলাকাবাসীর চলাচল ও মালামাল পরিবহনে তাদেরকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। স্থানীয় সমাজকর্মী ওয়াসিম বলেন সেতু এবং সেতু সংলগ্ন সড়কটি সংলগ্ন সড়কটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে এলাকার স্কুল ও কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রী এবং হাসপাতালগামী রোগীদের দুর্ভোগের সীমা থাকবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী অহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, সড়কের পাশে গভীরভাবে খাল খনন এবং সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় সড়ক এবং সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেতু সংলগ্ন সড়কটির কাজ কিছুদিনের মধ্যে শুরু হবে। ইতোমধ্যে সড়কটির অনুমোদন হয়েছে। সেতুটি উপজেলা পরিষদের তহবিল থেকে সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাকেরগঞ্জে দুর্ভোগে হাজারো মানুষ
নিজস্ব সংবাদদাতা, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল থেকে জানান, বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা ইউনিয়নের কৃষ্ণকাঠি গ্রামের মহেরের বাজার সংলগ্ন পোরা চিনা খালের ওপর নির্মিত সেতুর মাঝখান দিয়ে সিমেন্টের ঢালাই ভেঙে পড়ায় দীর্ঘদিন ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ পাঁচটি গ্রামের হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন পার হলেও সেতুটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, নড়বড়ে ও ভেঙে যাওয়া সেতুর সিমেন্টের ঢালাই বিভিন্ন স্থান থেকে ভেঙে পড়ে গিয়েছে। ক্রস অ্যাঙ্গেলগুলো মরিচা ধরে সেতুটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অনেক আগেই। চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙা সেতু দিয়ে মানুষ চলাচল করছে। স্থানীয়রা সেতুর ভেঙে পড়া স্থানে চলাচলের জন্য কাঠের মাচা তৈরি করে দিয়েছে। উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হাসনাইন হোসেন বলেন, সরেজমিনে গিয়ে সেতুর পরিস্থিতি দেখে প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে নির্মাণ করা হবে।