আমনের ধান খেতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়েছে। কৃষকের পাকা ধান কেটে সাবাড় করে ফেলছে ইঁদুরের দলগুলো। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের কৃষকরা। ইঁদুর দমনে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করেও কোনো প্রতিকার মিলছে না। কৃষকদের অভিযোগ- ইঁদুর দমনে মাঠ পর্যায়ে কৃষি সংশ্লিষ্টদের দেখা পাচ্ছেন না।
ফলে কৃষকরা অনেকটা বাধ্য হয়ে সনাতন পদ্ধতি অবলম্বন করছেন। কেউ ধান খেতে ব্যবহার করছে কলাগাছ, কেউ বিভিন্ন তাবিজ-কবজ সুঁতায় বেঁধে জমিতে ঝুলিয়ে রাখছে, কেউ ইঁদুর তাড়াতে ধানের জমিতে সুঁতা বা রশির মাধ্যমে আস্তানা করে বাজাচ্ছে বাদ্যযন্ত্র আবার কেউ কেউ বা জমিতে বাঁশের কঞ্চিতে পলিথিন বেঁধেছেন।
সম্প্রতি ‘ছাত্র-শিক্ষক-কৃষক ভাই, ইঁদুর দমনে সহযোগিতা চাই’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেলা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ইঁদুর নিধন অভিযান কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। কৃষি বিভাগ বলছে, ধান খেতে ইঁদুরের আক্রমণ প্রতিরোধে তারা মাঠে কাজ করছেন এবং কৃষকদের নানা রকম পরামর্শ দিয়ে আসছেন।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা রুহুলী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, ৩ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। কয়েক সপ্তাহ ধরে পাকা ধান খেতে ইঁদুরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। ধান কেটে সাবাড় করে ফেলছে। হাট-বাজার থেকে বিভিন্ন কীটনাশক দিয়ে ইঁদুর দমন করতে পারছি না। তাই খেতে পথিলিন সাঁটিয়েছি, যদি কিছু কাজ হয়।
কয়েড়া গ্রামের কৃষক রাশেদ আলী বলেন, একদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। এখন ইঁদুরের আক্রমণের শিকার। ২৫ শতাংশ জমি ২-৩ শতাংশ কেটে নষ্ট করে ফেলছে। ইঁদুরের আক্রমণ বন্ধ করতে ধান খেতে অনেক কিছু করেও কাজ হচ্ছে না। এদিকে, এমন সময়ে ইঁদুর দমনে সঠিক পরামর্শের জন্য কৃষি বিভাগের কাউকে পাচ্ছি না।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আশেক পারভেজ বলেন, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ১ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এই আমন মৌসুমে ধান খেতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দেয়। তাই ইঁদুর দমনে আমরা কৃষকদের পরামর্শ ছাড়াও ইঁদুর নিধনেও কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।