বীজ আলুর সংকটের কথা বলে বিদেশ থেকে আমদানি করা ৫০ কেজি ওজনের বীজ আলুর বাক্স টঙ্গীবাড়িতে বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা দরে। গত বছর একই সময়ে প্রতিটি বীজ আলুর বাক্স ৭-৮ হাজার টাকা মূল্যে বিক্রি হয়েছিল। খাওয়ার আলুর মূল্য বৃদ্ধির সাথে তাল মিলে এবার বীজ আলুর দাম ও দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
উচ্চ ফলনশীল ডায়ামন্ট, কার্ডিনাল, এগ্রিকো, হিরু, মুল্টা প্রভূতি জাতের আলু বীজ বিদেশ থেকে আমদানী করা হয়। তবে ব্রাক ও এসি আইয়ের প্রতিটি বাক্স ২০-২১ হাজারের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর বিএডিসির ৪০ কেজি ওজনের বীজ বিক্রি হয় ৬ হাজার ৫ শত টাকা বস্তা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার টঙ্গীবাড়ী, দিঘিরপাড়, বেতকা, বালিগাও, বাঘিয়া সহ প্রতিটি বাজারেই প্রায় একই মূল্যে বীজ বিক্রি হচ্ছে। বীজ বিক্রেতারা দোকান ঘড়ে বীজের বাক্স কম রাখলেও তাদের গোডাউনে রয়েছে পর্যপ্ত বীজের বাক্স, কেউ কেউ নিজের বাড়ীতেও গোপনে সংরক্ষন করছে বীজের বাক্স। আমদানী কমের কথা বলে দিন দিন বাড়াছে এসব বীজের দাম।
টঙ্গীবাড়ি বাজারের মেসার্স হুমায়ন এন্টার প্রাইজ, মেসার্স শান্তা ট্রেডার্স, মেসার্স মেঘলা ট্রেডাস, মেসার্স কাজী এন্টার প্রাইজ সহ ১২-১৩টি দোকানে গিয়ে দেখা যায় বীজ আলুর বাক্স সাজিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা আর কৃষকরা দাম শুনে অনেকেই ফিরে যাচ্ছে। উপজেলার যশলং গ্রামের কৃষক কাদির হালদার জানান, এবার বাক্সের আলু লাগাতে পারবো না।
যে দাম এত টাকা কই পাবো। আমরা আলু বিক্রি করি ৬০০ টাকা মন আর এখন কিনে খাই ২৮০০ টাকা মন। এবার সারের দাম বেশি, জমির বাৎসরিক ঠিকা দাম বেশি, কাজের বদলী, ঔষধ, আগাছা পরিস্কার, পানি দেয়া সব কিছুরই খরচ বেশি।
কৃষক পর্যায়ে ১৯ হাজার মেট্রিক টন বীজ আলু রয়েছে জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকতা জয়নুল আবেদীন তালুকদার আরো জানান, টঙ্গীবাড়িতে চলতি মৌসুমে ৯০৯৪ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বীজ আলুর দাম কৃষকদের জন্য অত্যান্ত বেশি হয়ে গেছে। এত দামে আলু কিনলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে না। আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
আমদানী করা বীজ আলুর মেমো দেখার ক্ষমতা আমাদের দেয়া হয়নি বিধায় আমরা কোন কিছুই করতে পারছি না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমদানী করা বীজ আলুর বিষয়ে আমরা বাজার মনিটরিং করবো। আমদানী পর্যায়ে ক্রয় মূল্য দেখে যৌক্তিক দামেই বীজ আলু বিক্রি করতে হবে ব্যবসায়ীদের।