রাজশাহীতে মানববন্ধন।
রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের উপ-পরিচালক রোজী খন্দকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম, ভোগান্তি ও দুনীতির অভিযোগ তুলে তার ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নগরের শালবাগান বাজারে পাসপোর্ট অফিসের সামনে ‘ভুক্তভোগী রাজশাহীর সাধারণ জনগণ’ ও ‘সচেতন নাগরিক সমাজের’ ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন তেকে অনিয়ম দূর করার দাবি জানানো হয়েছে। পরে উপ-পরিচালক রোজী খন্দকারের সঙ্গে দেখা করে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অনিয়ম দূর করতে এক মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে নাগরিক ভোগান্তি দূর না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, ক্যাবের রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা মামুন, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলার সম্পাদক মাহমুদুল হক, নারীনেত্রী রোজিটি নাজনীন, সেলিনা বেগম প্রমুখ।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা বলেন, এখানে দালালের মাধ্যমে আসা বিশেষ ফাইলগুলো সরাসরি দোতলায় উপপরিচালক রোজী খন্দকারের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এসব ফাইলে সই করে দেন। তারপর দোতলাতেই সহকারী পরিচালক এসব ফাইল কম্পিউটারে এন্ট্রি করেন। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাইলগুলো নিচতলায় চলে আসে। সেখানে ছবি তুলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা বাড়ি ফিরে যান।
আর যারা দালালকে অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে নিজেরাই এসে লাইনে দাঁড়ান, তাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিচতলায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েই থাকতে হয়। এর ফলে রোজ অসংখ্য মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
তারা বলেন, দালাল না ধরে ফাইল আনলে শুধু ভুলই খোঁজেন কর্মকর্তারা। আর দালালের মাধ্যমে ফাইল এলে কিছুই দেখা হয় না। দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট অফিসের প্রত্যেক কর্মকর্তা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা কামাই করছেন।
মানববন্ধন শেষে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা এসব বিষয় নিয়ে উপপরিচালক রোজী খন্দকারের সঙ্গে কথা বলতে তার কক্ষে যান। এ সময় রোজী খন্দকার সব অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি দুর্নীতির প্রমাণ দেখাতে বলেন। এ সময় রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান তাঁকে হুশিয়ার করে বলেন, আগামী এক মাসের মধ্যে সব অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ করে নাগরিক ভোগান্তি দূর করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
উপ-পরিচালক রোজী খন্দকার পাসপোর্টের ‘জি-২৫’ সিন্ডিকেটের সদস্য হিসেবে পরিচিত। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো পাসপোর্ট অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) আবু আসাদ যখন পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) ছিলেন তখন তার ছত্রছায়ায় তৎকালীন পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম ‘জি-২৫’ সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন বলে একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এই সিন্ডিকেটভুক্ত ২৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। তারা প্রতিদিন অন্তত ২৫ লাখ টাকা ঘুষ আদায় করেন বলে তাদের জি-২৫ সিন্ডিকেটের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিতি পান।
এসআর