ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

দুর্ভোগে স্কুল শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত ড্রেন

মোহাম্মদ আবদুর রহিম, বান্দরবান

প্রকাশিত: ১৭:৫৮, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

দুর্ভোগে স্কুল শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত ড্রেন

বান্দরবান পৌরসভায় টাইলস করা চলাচলের ফুটপাত ভেঙ্গে অপরিকল্পিত ড্রেন নির্মাণের করণে চরম ভাবে দুর্ভোগে পড়েছে চলাচলকারি স্কুল শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। ড্রেনগুলো বান্দরবান পৌরসভা থেকে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরে নির্মাণের পর ড্রেনের উপরে পথচারী চলাচলের জন্য টাইলস বেষ্টিত ফুটপাত নির্মাণ করা হয়। তবে এই ড্রেনগুলো পুরোপুরি ভালো থাকা সত্ত্বেও পৌরবাসীর জলাবদ্ধতা নিরসনের অজুহাতে টাইলস করা ফুটপাতের নিছে ভালো মানের ড্রেনগুলো ভেঙ্গে শহরের প্রধান সড়কের ট্রাফিক মোড় হতে পৌরসভা কার্যালয় পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

এ কাজগুলো পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ করা হচ্ছে। ড্রেনগুলো পুনঃনির্মাণে ঠিকাদার প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারের উপস্থিতিতেই নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ময়লা-আবর্জনাযুক্ত পানির মধ্যে আরসিসি ঢালাই দিয়ে ড্রেন নির্মাণ হচ্ছে। এছাড়া পৌরসভা এলাকায় ড্রেন নির্মাণে স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে চলতি বছরের শুরুতেও উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলীরা অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে বান্দরবান বাজার এলাকায় ড্রেন পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছিলেন।

এর পরেও টনকনড়ছে না নির্মাণ কাজের তত্বাবধানে থাকা দায়িত্বশীল প্রকৌশলীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উন্নয়ন বোর্ডের এসব ড্রেন নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীদের অনুমতি ছাড়াও রাতের আঁধারেও ঢালাই কাজ করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে ড্রেনগুলো নির্মাণ করার ৩ মাস না যেতেই বান্দরবান পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বান্দরবান সদর হাসপাতাল গেইট হতে জেল গেইট পর্যন্ত ড্রেনগুলে পুনরায় ভেঙে নির্মাণ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের ধারণা ঠিকাদারের সঙ্গে প্রকৌশলীরা আতাত করে ড্রেন গুলোতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাপক অনিয়ম করেছে।
বান্দরবান বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে পুরোনো ড্রেন ভেঙে আরসিসি নতুন ড্রেন নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। বাস্তবে বান্দরবারবান বাজারে কোন জলাবদ্ধতা নেই। তবে এ কাজগুলোর কাজের গুণগতমান খুবই খারাপ হচ্ছে। ড্রেনের ময়লা পানি অপসারণ না করেই পানির মধ্যেই দায়সাড়া ঢালাই দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সিমেন্টের পরিমাণও খুবই কম।

ড্রেন নির্মাণের কাজগুলো টেকসই হচ্ছে না। ঠিকাদারের সঙ্গে দায়িত্বশীল ইঞ্জিনিয়ারের যোগসাজশেই অনিয়মগুলো হচ্ছে। এই কারণে অভিযোগ করেও কোনো সুফল মিলছে না বলে জানান তারা।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানের নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধানে দায়িত্বশীল উপ-সহকারী প্রকৌশলী সোমনাথ চৌধুরী জানান, বান্দরবান শহরের ড্রেনের কাজগুলোর আলাদা আলাদা ঠিকাদারের মধ্যমে কয়েকটি প্যাকেজের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ড্রেনগুলোর আউটলাইন ছোট থাকায় ভেঙে পুনরায় নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়া ড্রেনের পানি যাতে নদিতে যেতে পারে সে ব্যবস্তা করা হচ্ছে।

তবে ড্রেনের উপরে ফুটপাতে টাইলস গুলো ভেঙে ফেলা হলেও ড্রেনগুলি নির্মাণ হয়ে গেলে আবার নতুন ভাবে পার্কিং টাইলস লাগিয়ে দেওয়া হবে।
বিষয়েটি জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াছির আরাফাত বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের কাজে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। অনিয়ম পেলেই ব্যাবস্থা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে হাসপাতালের সামনের ড্রেনগুলো একটু উঁচু হওয়ার কারণে পানি চলাচল করতে না পারায় সেগুলোর উপরে অংশ ভেঙ্গে নতুন ভাবে নির্মাণ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

 

×