পৌর শহরের মূল সড়ক ও রেললাইনের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে -জনকণ্ঠ
নাঙ্গলকোটে পৌর শহরের মূল সড়ক ও রেললাইনের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যস্ত সড়কের দুইপাশে প্রতিনিয়ত আবর্জনা ফেলায় দুর্ভোগ দিন দিন বাড়ছে।
স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকার চেয়েও মিলছে না। সমস্যাটি আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে। কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাঙ্গলকোট প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। পৌর শহরে নাগরিক সুবিধা নেই বললেই চলে। শহরে পরিচ্ছন্নতা চোখে পড়ে না। এ অবস্থায় বাড়তি দুর্ভোগ হয়ে দাঁড়িয়েছে যত্রতত্র আবর্জনার ভাগাড়। অথচ মূল সড়কের দুইপাশ ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের সংলগ্ন স্থানে প্রতিনিয়ত পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা নিয়ে এসে বিশাল স্তূপ করা হয়েছে। এতে স্কুলপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীসহ পথচারীদের মুখ চেপে ধরে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
নাঙ্গলকোট পৌরসভার স্থানীয় বাসিন্দা আমিনুল হক বলেন, নানা প্রয়োজনে তাকে প্রতিনিয়ত এই রাস্তায় আসা-যাওয়া করতে হয়। তার পাশে রয়েছে পদ্মা হাসপাতাল, প্রতিনিয়ত এই রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু ময়লার দুর্গন্ধে হাসপাতালের রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের স্টাফ আবদুর রহিম বলেন, ডানে গেলে দুর্গন্ধ। বাঁয়ে গেলেও দুর্গন্ধ। এই অবস্থায় পৌরসভায় স্বাভাবিক যাতায়াত করা কারও পক্ষে সম্ভব নয়। ময়লার ভাগাড়ে আবর্জনার স্তূপটি থেকে বের হওয়া দুর্গন্ধ চারপাশের অনেকদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। পৌর শহরের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিজোয়ান ইসলাম জানান, আমরা বিদ্যালয়ে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে আমাদের পেট ফুলে ওঠে। অন্য সড়ক দিয়ে যেতে চাইলেও পরিস্থিতি একই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সংখ্যা ১৪ জন। মূলত খোলা জায়গায় আবর্জনা ফেলছেন ওই পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরাও আবর্জনা ফেলে আসছেন। প্রতিটি ভাগাড় থেকে কেবল দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে না, একইসঙ্গে মশা-মাছি উৎপাদনের নিরাপদ আবাসস্থল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে সমস্যাটি বড় হয়। তখন আবর্জনা চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ময়লার কারণে বৃষ্টির পানি কোনোদিকে সরতে না পারায় রাস্তার ওপর জমে থাকে হাঁটু পরিমাণ পানি। এই অবস্থায় পৌরসভাকে আবর্জনামুক্ত করার আর কোনো কর্তৃপক্ষ দৃশ্যমান নেই।
পৌর সচিব হারুনর রশিদ বলেন, পৌরসভার তেমন কোনো আয় নেই, তহবিল শূন্য। ময়লা ফেলার সরকারি কোনো নির্দিষ্ট জায়গা নেই। এর জন্য প্রয়োজনীয় সরকারি কোনো বরাদ্দও নেই। ডাম্পিংয়ের জন্য জায়গা কিনতে অনেক টাকার প্রয়োজন। মূলত আবর্জনা সরানোর স্থায়ী জায়গা না থাকায় সমস্যাটি বড় হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অনেকে আবর্জনা পলিথিনে ভরে সড়কের পাশে ফেলে যান। সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ পেলে আবর্জনা সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগ নেবেন।
এই বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুরাইয়া আক্তার লাকী জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদি কিছু করার থাকে, অবশ্যই তিনি করার চেষ্টা করবেন। তিনি আরও বলেন, ময়লা ফেলার জন্য নিরাপদ জায়গা খুঁজছি।