ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

রেলের জায়গা দখল করে  সাবেক মন্ত্রীপুত্রের ব্যক্তিগত পার্ক

নিজস্ব সংবাদদাতা লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ১৫:৪৭, ১৮ নভেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৫:৫৫, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

রেলের জায়গা দখল করে  সাবেক মন্ত্রীপুত্রের ব্যক্তিগত পার্ক

অবৈধ পার্কের স্থাপনা উচ্ছেদ

লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলরুটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার রেলওয়ে স্টেশনের পাশে প্রায় ২ একর জায়গা দখল করে  সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের ছেলে রাকিবুজ্জামান আহমেদ ও তার পরিবার ব্যক্তিগত বিনোদনের জন্য পার্কের আদলে  গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা অবশেষে উচ্ছেদ করেছে রেলওয়ে কর্তপক্ষ।

এর আগে গত বছর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ওই জায়গায় দুইবার পরিদর্শনে করেছিলেন। কিন্তু সাবেক মন্ত্রীর প্রভাবে উচ্ছেদ অভিযানে বাধাগ্রস্থ হয়।


সোমবার দুপুরে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের উপস্থিততে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান,রেলওয়ের জায়গার ওপড় অবৈধভাবে এ স্থাপনাটি গড়ে তুলতে রাকিবুজ্জামান জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে ভিন্ন নামে ২০টি প্রকল্পের মাধ্যমে দেড় কোটি টাকাও তুলেছেন। সরকারি টাকায় তিনি ব্যক্তিগত ওই ব্যক্তিগত পার্ক তৈরী করেছেন নিজের বিনোদনের জন্য। যেখানে জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ ছিলো। গত ৫ আগষ্ট তীব্র গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার থেকে নুরুজ্জামান আহমেদ ও রাকিবুজ্জামান পলাতক আছেন। তাদের দুজনের বিরুদ্ধেই পৃথক হত্যা মামলা হয়েছে।


স্থানীয়রা আরো জানান, ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তুষভান্ডার রেলওয়ে স্টেশনের পার্শ্ববর্তী জায়গাটিতে এলাকার দরিদ্র লোকজন বসবাস করতো। পাশে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করতেন। কিন্তু সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ পুত্র রাকিবুজ্জামান আহমেদ দলীয় ক্ষমতা দেখিয়ে ঘরবাড়ি ও দোকানপাট উঠিয়ে দিয়ে জায়গাটি দখলে নিয়ে প্রথমে টিন দিয়ে ঘিরে ফেলেন। পরে জায়গাটির চারদিকে ইটের প্রাচীর দেওয়া হয়। মূল ফটকের ওপর বসান কংক্রিটের তৈরী নৌকা। পাশে অবৈধভাবে তৈরি করেন আওয়ামিলীগ অফিস।


এছাড়া ভেতরের অংশে মাটি কেটে একটি বড় পুকুর ও চারপাশ ঘিরে তৈরি করা হয় সড়ক। বসানো হয় চেয়ার-টেবিল। রাকিবুজ্জামান সেখানে মাঝেমধ্যে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতেন সেখানে।


রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, রেলওয়ের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের শুরুতেই সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে চিঠি দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি এর তোয়াক্কা করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেলওয়ের বিভাগীয় সহকারী ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা (ডিইও) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'রেলওয়ের জায়গার ওপর গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


উল্লেখ্য, নুরুজ্জামান আহমেদ ২০১৬ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০২৪ সালের মন্ত্রিসভায় তিনি বাদ পড়েন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

ইসরাত

×