রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটাকে বৈষম্যমূলক, বেআইনী এবং সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে এই কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ তিন দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা উপদেষ্টাকে লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করেন তিনি। শনিবার এ নোটিশ ইস্যু করলেও সোমবার এতথ্য জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মো. নাজিমুদ্দীন মৃধা এ নোটিশ পাঠিয়েছেন। নোটিশে তিনি ৭ দিনের মধ্যে পোষ্য কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন দায়ের করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। নোটিশে তার অন্য দুই দাবি হলো- যারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়ে এখনও অধ্যয়নরত রয়েছে, তাদের ভর্তি বাতিলে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। বিগত ৪ টি শিক্ষাবর্ষে যারা পোষ্য কোটায় ভর্তি হয়েছে গ্রেস মার্ক দিয়ে তাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রদান করতে হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ওই শিক্ষার্থী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এডভোকেট মো. নাজিমুদ্দীন মৃধা বলেন, এ ধরণের পোষ্য কোটার প্রচলন এবং একটি গোষ্ঠীকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং দেশের প্রচলিত কোন আইন বা সংবিধানে এমন অন্যায্য অগ্রাধিকার দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এটা রাষ্ট্রের মৌলিক নীতি ও সংবিধান পরিপন্থী।
পোষ্য কোটায় গ্রেস মার্ক দিয়ে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জ্বাজনক উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পূর্বে ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া সত্ত্বেও পোষ্য কোটাধারীদের গ্রেস মার্ক দিয়ে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ দেশের অন্যতম বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যে লজ্জ্বাজনক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মৌলিক ধারণার পরিপন্থী। এটা করার অধিকার ও কর্তৃত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই।
পোষ্য কোটা সংবিধান পরিপন্থি উল্লেখ তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের সন্তানরা কখনও পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী নয়। বরং তাদের সন্তানরা ভালো পরিবেশ ও ভালো স্কুল-কলেজে পড়ার সুযোগ ভোগ করেন। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের নিজেদের সন্তানদের অনৈতিক সুবিধা দিতে নিজেদের দ্বারা প্রচলিত ‘পোষ্য কোটা’ চালুর ধারনাটি ‘স্বার্থের সংঘাত’ নীতি এবং সংবিধান পরিপন্থী। বিধায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য, সুনাম রক্ষা ও মানোন্নয়নের স্বার্থে অবিলম্বে তা বাতিল করা উচিত।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, নোটিশটি আমার দফতরে এসেছে বলে জানতে পেরেছি। তবে সেটি দেখার সুযোগস হয়নি। নোটিশ দেখে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মামুন/জাফরান