ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

পিচঢালা কালো মহাসড়কে এ যেন লাল-সবুজের হাসি…

মহাসড়কের ডিভাইডারে শীতকালীন শাক-সবজি চাষে কৃষকের বাড়তি আয়

রাজিব মজুমদার, মীরসরাই, চট্টগ্রাম ॥

প্রকাশিত: ১১:২৫, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

মহাসড়কের ডিভাইডারে শীতকালীন শাক-সবজি চাষে কৃষকের বাড়তি আয়

দেশের লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সেজেছে বহুমাত্রিক রুপে। সড়কের মিডিয়ান গ্যাপে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, গাছের ফুলে সুসজ্জিত সড়ক।

এছাড়াও মহাসড়কের চট্টগ্রামের প্রবেশদ্বার মীরসরাই অংশের কয়েক কিলোমিটার জুড়ে সড়কের ১২ ফুট প্রশস্ত ডিভাইডার (মিডিয়ান) খালি অংশে চাষ করা হচ্ছে নানা জাতের শীতকালীন শাক-সবজি। এতে একদিকে  যেমন বেড়েছে মহাসড়কের সৌন্দর্য, অন্যদিকে সবজি চাষে নিজের চাহিদা মেটাতে পারছেন কৃষক। কেউ কেউ এসব সবজি বিক্রি করে উপার্জন করছেন অর্থ। দূর থেকে এসব সবজি দেখলে মনে হয় পিচঢালা কালো মহাসড়কে এ যেন লাল-সবুজের হাসি। 


সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাই উপজেলার সোনাপাহাড়, চেয়ারম্যান  রোর্ডের মাথা, মস্তাননগর বিশ্বরোড়, ভাঙ্গা দোকান, ঠাকুরদীঘি, সুফিয়া রোড, ওয়্যারলেস, বড়তাকিয়া এলাকায় স্থানীয় কৃষকরা মহাসড়কের দুই পাশের সার্ভিস লাইনের ফাঁকা ডিভাইডারে পরিত্যক্ত জায়গায় সওজের লাগানো বিভিন্ন গাছের মাঝে মাঝে আগাছামুক্ত ও পরিষ্কার করে পরম যত্নে বিষমুক্ত লালশাক, পুঁইশাক, মুলার শাক, পালং শাক, শিম, তিতা করলা, বেগুন, মরিচ, জিঙা, সাজনা, পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, লাউ, ঢ্যাঁড়স, ধনেপাতা, সরিষাসহ বিভিন্ন জাতের শাক সবজি চাষাবাদ করেছেন। দূর থেকে দেখলে মনে হয় পিচ ঢালা কালো মহাসড়কের মাঝে যেন লাল-সবুজের মিতালী। এ যেন আরেক সবুজারোণ্য। 
স্থানীয়রা বলছেন, রংবেরঙের এসব শাক-সবজি মহাসড়কের সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। আশপাশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ভূমিহীন ব্যক্তিরা পরিত্যক্ত এ সড়কের মাঝে খালি জায়গায় ভরাট করা মাটিগুলো ফসল উৎপাদনের জন্য খুবই উর্বর হওয়ায় শীতকালীন বিভিন্ন শাক সবজির চাষাবাদ করেছেন তারা। মহাসড়কের ডিভাইডারে শাক সবজি চাষ করে ওই কৃষকরা একদিকে যেমন তাদের সংসারের সবজির চাহিদা পূরণ করছেন, অন্যদিকে সবজি বিক্রি করে বাড়তি আয়ও করছেন।
দুর্গাপুর ইউনিয়নের কৃষক ফয়েজ আহম্মেদ, আলমগীর বলেন, সড়কের মাঝখানের অংশে জন্মানো ঘাস পরিষ্কার করে সবজি মুলা, পালং শাক, লাল শাক, শিম, মিষ্টি কুমড়া ও ধনেপাতার চাষ করেছি। এতে লাভ হওয়ায় বেশ আনন্দ লাগছে। এখানে রোদ-বৃষ্টি যা-ই হোক, ফসলের তেমন ক্ষতি হয় না। বৃষ্টি বেশি হলেও পানি জমে না। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ পেলে সবজির ফলন আরো ভালো হবে।
জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের কৃষক এনামুল হক, দেলোয়ার ও রবিউল হোসেন বলেন, আমাদের শাক-সবজি চাষের জমি নেই। বাজারে শাক-সবজির অনেক দাম। বাজার থেকে কিনে খাওয়ার সাধ্য নেই। তাই রাস্তার মধ্যখানের জায়গায় শাক-সবজি লাগালাম। আশা করছি আর বাজার থেকে কিনতে হবে না, বরং বিক্রি করতে পারব।
এই বিষয়ে মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসার প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ডিভাইডার (মিডিয়ান) খালি অংশের জায়গা সড়ক ও জনপদ বিভাগের। এখানে কৃষি অফিসের কোনো বক্তব্য নেই। তবে জেনেছি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ভূমিহীন ব্যক্তিরা পরিত্যক্ত এ সড়কের মাঝে খালি জায়গায় বিভিন্ন শাক সবজি চাষাবাদ করেছে।

 

জাফরান

×