.
অ্যাপ্রোচ চ্যানেলে প্রকট নাব্য সংকটে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে আবারও ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসি। নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে গত শনিবার সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে এ রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করা হয়। রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পরীক্ষামূলক বহরের চিত্রা নামক একটি ফেরি লোডকৃত অবস্থায় আরিচা থেকে কাজিরহাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে ঘাটের অদূরে সৃষ্ট ডুবোচরে আটকে পড়ে। সন্ধ্যা ৭টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ফেরিটি চরায় আটকে ছিল। চলতি মাসে এ নিয়ে তৃতীয়বারের ন্যায় ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
ফেরি সেক্টর বিআইডব্লিউটিসি আরিচা আঞ্চলিক অফিস সূত্রে জানা যায়, যমুনায় ফেরি চলাচলের নির্ধারিত চ্যানেলে পর্যাপ্ত নাব্য না থাকায় ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আরিচা ঘাটের মুখে এপ্রোচ চ্যানেলে পলি জমে নদীর গভীরতা কমে যাওয়ায় ফেরি চলাচলে বাধা সৃস্টি হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনা এড়াতে বিআইডব্লিউটিসি বারবার ফেরি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করছে।
এদিকে, ফেরি চলাচলের নির্ধারিত চ্যানেলে নাব্য রক্ষায় ৩ মাস যাবৎ নিয়মিত ড্রেজিং কার্যক্রম চালাচ্ছে বিআইডব্লিউটিএ। এ সংস্থার নিজস্ব শক্তিশালী ৬টি ড্রেজার পলি অপসারণে নিরলশ কাজ করেও যেন খেই হারিয়ে ফেলছে। ড্রেজিং ইউনিটের প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নদীতে অব্যাহত পানি হ্রাস ও নদীর তলদেশে স্রোতের মাত্রা তীব্র হওয়ায় চ্যানেলে সহসাই পলি জমছে। তবে, চ্যানেল স্বাভাবিক করতে কত সময় লাগবে এর কোনো সঠিক উত্তর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে।
অপরদিকে, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয়ঘাটে পারের অপেক্ষায় থাকা অন্যান্য যানবাহনের সঙ্গে পণ্যবাহী ট্রাকের সারি যেন ক্রমেই ভারি হচ্ছে। সময়মতো ফেরি পারে ব্যর্থ এ সকল যানবাহনের শ্রমিরা ঘাটে আটকে পড়ে নানাভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।
আরিচা ফেরি বুকিং কাউন্টার সূত্রে জানা যায়, এ রুটে ফেরি পারের যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রাকের সংখাই বেশি। তবে প্রত্যেকটা ট্রাক ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্র মালামাল বহন করছে। প্রত্যহ গড়ে এ রুটে প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিনশ’ ট্রাক পারাপার হচ্ছে।
এ রুটের ফেরি ধানসিঁড়ির মাস্টার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম জানান, নৌপথের সরু চ্যানেলে পর্যাপ্ত গভীরতা না থাকায় ফেরি চলাচল মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। স্বাভাবিক ফেরি চলাচলে চ্যনেলে ন্যূনতম ১০ ফুট গভীরতা প্রয়োজন হলেও রয়েছে মাত্র ৭ থেকে সাড়ে ৭ ফুট। এমতাবস্থায় যানবাহন লোড নিয়ে চলাচল তো দূরের কথা খালি ফেরি চলাচলও দুষ্কর।
উল্লেখ্য, নাব্য সংকটের কারণে চলতি মাসের ১ তারিখ রাত ১০টা থেকে সাড়ে ৩৭ ঘণ্টা ও ৮ নভেম্বর রাত ১১টা থেকে টানা ৮২ ঘণ্টা ফেরি চলাচর বন্ধ ছিল।