ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জ

৫৩ বছরেও ইছামতি নদীর  ওপর সেতু হয়নি

স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২০:২১, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

৫৩ বছরেও ইছামতি নদীর  ওপর সেতু হয়নি

সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের সড়াইচন্ডী গ্রামের বাঁশের সাঁকো দিয়ে ইছামতি নদী পারাপার

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার  শিয়ালকোল ও বহুলি ইউনিয়নের  তিন প্রজন্মে মানুষ স্বপ্ন দেখছেন ইছামতি নদীর সরাইচন্ডী এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ হবে। বারবার জনপ্রতিনিধিরা এসেছেন, এলাকাবাসীকে স্বপ্নও দেখিয়েছেন। কিন্তু ৫৩ বছরেও তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। দুই ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের মানুষের একটি সেতুর স্বপ্ন কবে বাস্তবায়িত হবে সে আশা এখনো ফুরায়নি। স্বাধীনতার ৫৩ বছর কেটে গেছে। জনপ্রতিনিধিরা এসেছেন, প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সেতু করে দেবেন। কথা দিয়ে ভোট আদায় করে নিলেও ৫৩ বছরে কেউ কথা রাখেনি এভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন সড়াইচন্ডির আজাহার আলী। এখনো তাদের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার হতে হয়।
সরাইচন্ডী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে মানুষ  হেঁটে চলাচল করছে। তবে পণ্যবাহী কোনো যানবাহন যাতায়াত করতে পারে না। বাঁশের নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল বা মোটরসাইকেল পার হলেও তিন চাকার গাড়ি চলে না। বর্ষা মৌসুমে নৌকাযোগে ইছামতি নদী পার হতে হয়। আর শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার তাদের ভরসা।  বেলাল হোসেন, আজাহারা আলী, আব্দুল ওয়াহাব, ইকবাল হোসেনসহ স্থানীয় একাধিক লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সরাইচন্ডী ঘাট দিয়ে বহুলী ইউনিয়নের সরাইচন্ডী, চর পদুমপাল, মাছুয়াকান্দি, রাজাপুর, রহিমপুর, ডুমুর ইছা, চাঁদপাল, আলমপুর, শিয়ালকোল ইউনিয়নের চন্ডিদাসগাঁতী, জোয়ালভাঙা, বহুতী, ছোট হামকুড়িয়া, শিলন্দা ও ধুকুরিয়াসহ অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ সরাইচন্ডী ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে। সরাইচন্ডী এলাকার ইছামতি নদীর দুই পারেই রয়েছে পাকা সড়ক। কিন্তু নদীতে সেতু না থাকায় কৃষিপণ্য, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এলাকার মানুষকে। 
তারা আরও বলেন, এটি কৃষিপ্রধান এলাকা। এখানে প্রচুর পরিমাণ শীতকালীন সবজির আবাদ হয়। কিন্তু এসব কৃষিপণ্য শহরে সরবরাহ করা অনেক কষ্টকর হয়ে পড়ে। ফলে ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। অপরদিকে নদীর দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে স্কুল-কলেজ। প্রতিদিনই এই নদী পার হয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হয় হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে। সেতুর অভাবে ছাত্র-ছাত্রীদেরওে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। গর্ভবতীসহ মুমূর্ষু রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নিতে না পারায় অনেকে মারা যাচ্ছে। এমন নানান দুর্ভোগ নিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি নেই অবহেলিত কৃষিপ্রধান এলাকাটির দিকে। বহুলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ আলী বলেন, আমরা বারবার প্রতিশ্রুতি শুনে এসেছি। সেতুটি নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়ার কথাও শুনেছি। কিন্তু সেটা বাস্তবে পরিণত হয়নি। আমি এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অবিলম্বে সেতুটি নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।

×